তারবিহীন যন্ত্র সহজ করে দিয়েছে যোগাযোগ কেড়ে নিয়েছে মায়া মমতা আর ভালোবাসা বিলীন করে দিয়েছে টেলিগ্রাফ। ছেলে বিদেশ থাকে পরিবারের সবার দৃষ্টি থাকতো কখন আসছে প্রিয় সন্তান, প্রিয় ভাইয়ের চিঠি? অনেকে আবার কিছু দিন পর পর পোস্ট অফিসে ছুটে গিয়ে খবর নিচ্ছেন চিঠি আসলো কি না। এসবই হতো ভালোবাসার টানে। বর্তমান সময়ে ডাক পিয়নের ঘুরাঘুড়ি এখন আর চোখে পড়ে না, দরকার পরে না পোস্ট অফিসে গিয়ে খবর নেয়ার, ডাক পরেনা ভাতিজার পাশের বাড়ির চাচার চিঠিটা পরে দেয়ার জন্য। সন্তান চিঠি পাঠিয়েছে মা বাবা ভাই বোন কত খুশি কি জানি লিখছে বার বার চিঠি পড়া শুনছে আর অঝর ধারায় ঝরছে সবার চোখের পানি তবুও যেন শোনার তৃপ্তির শেষ হচ্ছে না শুধু পড়া শুনতেই যেন ইচ্ছে করছে তাদের। উত্তর লিখেছে বাবা মা “স্নেহের খোকা আমাদের আদর দোয়া নিও আমরা ভাল আছি, দোয়া করি আল্লাহ তোমাকে যেন ভালো রাখেন, খোকা তর জন্য মন ছটফট করে রে কতদিন হয় তোকে দেখিনা, খোকা তোমার নিজের শরীরের দিকে যত্ন নিও সময়মতো খাওয়া দাওয়া করবে বাবা, আমাদের জন্য চিন্তা করবে না আমরা ভালো আছি, তোমার ভাই বোন সবাই ভালো আছে, ভালো থেকো বাবা………….. ফি আমানিল্লাহ” সাধারণত এভাবেই বাবা মায়ের চিঠির উত্তরে থাকতো। এদিকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষার প্রহর গুনছে প্রবাসে থাকা ছেলে মা বাবা কেমন আছে চিঠিটা পেয়েছে কি না? যতক্ষণ না উত্তর আসছে ততক্ষণ এই প্রশ্নটা রয়েই যায়। অনেক সময় দেখা গেছে চিঠির উত্তর আসছে ঠিক কিন্তু চিঠির লেখার সাথে বাস্তবতার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, চিঠি আসছে ততক্ষণে কেউ একজন চলে গেছে পরপারে না ফেরার দেশে আর এই চিঠিটা যেন সৃতি হয়ে পরে থাকে বালিশের চাপে। এখন আমাদেরকে বিশ্বের অদূর প্রান্ত থেকে যোগাযোগের জন্য সেই বাহনের অপেক্ষা করতে হয় না। সহজেই কথা বলি শুনি এবং দেখতেও পারি কিন্তু ভালবাসার সেই আবেগ অনুভূতি আগের মত আসে না। এখন বালিশের নিচে চেপে রাখা যায় না সৃতি মায়া মমতা ঘেরা বাবা মায়ের চিঠি, সৃতির সেই স্বাদ যেন কেড়ে নিয়ে গেছে তারবিহীন যন্ত্র মোবাইল ফোন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn