- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ইউরোপ দেশগুলোতে বসবাস কিংবা উচ্চশিক্ষা অনেকের স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নগুলো মলিন হয়ে যায় বিভ্রান্তিকর নানা তথ্যের কারণে। অনেকে সে ভুল তথ্যের কারণে বিপদেও পড়েন। সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ, চাকরি, যোগাযোগব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে এখন এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। আর অভিবাসন প্রত্যাশীদের পছন্দের তালিকায়ও অস্ট্রেলিয়া এখন শীর্ষস্থানীয় একটি দেশ। তবে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ-সুবিধা বেশি ইউরোপের অন্যতম বিখ্যাত দেশ কানাডায়। শীতপ্রধান এই গণতান্ত্রিক দেশে মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করে। অস্ট্রোলিয়ার হোম অ্যাফিয়ার্সের তথ্য মতে, বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে। অস্ট্রোলিয়ার ইমিগ্রেশন এই ক্যাটাগরিকে বিভিন্ন সাবক্লাসে বিভক্ত করেছে। অস্ট্রোলিয়ার হোম অ্যাফিয়ার্সের তথ্য মতে, কয়েকটি ভিসার নিয়ম আলোচনা করা হলো-
কাজ করার জন্য অস্ট্রেলিয়া– অস্ট্রেলিয়ায় বৈধভাবে কাজ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত প্রোগ্রাম সাব-ক্লাস-৪৮২। এই ভিসার ক্ষেত্রে ভিসাপ্রার্থীকে অবশ্যই টিএসএস ভিসার পেশা তালিকার জন্য একটি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মনোনীত হতে হবে। এই ভিসার জন্য আইইএলটিএসে ৫ কিংবা, সমমানের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। মূলত ডিগ্রি পাসধারী দক্ষ ও অভিজ্ঞ বাংলাদেশিদের জন্য এটা বড় সুযোগ। বাংলাদেশিরা যদি প্রথম থেকেই দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে ফাইল প্রসেস করে তবে স্বল্প সময়ে এই ভিসা পাওয়া নিশ্চিত। অস্ট্রোলিয়ার হোম অ্যাফিয়ার্সের তথ্য মতে, অস্ট্রেলিয়া ডিমান্ড লিস্টে ৪৩২টি পেশা রয়েছে, সুতরাং অনেকেই বিভিন্ন সাবক্লাসে আবেদন করে পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগটি নিতে পারেন।

পড়াশোনার জন্য অস্ট্রেলিয়া:– ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন, ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব সিডনি, মোনান্স ইউনিভার্সিটি, কারটিন ইউনিভার্সিটি শুধু অস্ট্রেলিয়ার জন্য নয় পুরো পৃথিবীর বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্যতম। বিবিএ, এমবিএ, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, আইন, আইটি, একাউন্টেন্টসহ বর্তমান সময়ে প্রচলিত সব বিষয়ে পড়াশোনা করা যায়। পড়াশোনা শেষ করে কিছুদিন চাকরি এবং অতঃপর স্থায়ীভাবে পরিবারসহ বসবাস করার সুযোগ পাওয়া যায়।
ভ্রমণ ভিসায় অস্ট্রেলিয়া:– খ্যানস (Cairns), ফ্রেজার (Fraser), দ্য ওয়াইটসানডেস (The Whitsundays), ইয়ামবা (Yamba), সিডনি (Sydney), ব্রাইট (Bright) পৃথিবীর ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। বছরের যেকোনো সময় পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার এসব স্থানে। ভ্রমণ ভিসার ক্ষেত্রে এখন নিয়ম অনেকটা শিখিল। সঠিক কাগজপত্র ও প্রকৃত কারণ দেখাতে পারলে এই ভিসা দ্রুত সময়ে পাওয়া সম্ভব বলে মনে করা হয়। অস্ট্রেলিয়ান ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে দক্ষতার সঙ্গে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে, তার মধ্যে অ্যাবরোড সোলুশনস (Abroad Solutions) অন্যতম।
এমপ্লয়ার স্পন্সরশিপ:– অস্ট্রেলিয়ান কোনো কোম্পানি যদি আপনাকে স্পন্সর করতে ইচ্ছুক হয় তবে আপনার ভাগ্য খুলে গেল। এটি জোগাড় করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এখানে অনেক ধরনের ভিসা হয়। সঠিক ভিসা খুঁজে পাওয়ার ওপর সবকিছু নির্ভর করে।কোন ধরনের ভিসার জন্য আপনি উপযুক্ত তা সঠিক ও বিস্তারিতভাবে জানাটা সবচেয়ে জরুরি। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ইমিগ্রেশন আইনজীবীর পরামর্শ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। এ ভিসায় প্রশিক্ষণটি দুইভাবে হতে পারে। সরাসরি একই পেশায় অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করার মাধ্যমে অথবা ট্রেনিং ভিসার (সাবক্লাস ৪০৭) মাধ্যমে। কার্যকরী ইংরেজি ভাষা দক্ষতা (আইইএলটিএসে ৪ পয়েন্ট ৫) থাকতে হবে। ১৮ বছর বয়সী বা তার ঊর্ধ্বে হতে হবে।

এমপ্লয়ার নমিনেশন স্কিম (১৮৬):– স্থায়ীভাবে পরিবারসহ এ স্কিমে আবেদন করে বসবাস ও কাজ করা যায়। নাগরিকত্ব লাভ করা সম্ভব। অস্ট্রেলিয়ায় দুই বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য অস্ট্রেলিয়া– সাব-ক্লাস ১৮৯, স্কিল্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ভিসা –বিষয়টি সম্পূর্ণ পয়েন্টের ওপর নির্ভর করে। মোট ৬৫ পয়েন্ট প্রয়োজন হয়। পয়েন্ট পাওয়া যায় বয়স, কাজের অভিজ্ঞতা, পড়াশোনা, ভাষা এবং বিভিন্ন বিষয়ের ওপর চূড়ান্ত দখলের ওপর। সম্প্রতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অ্যাব্রড সল্যুাসান নামে কনসালটিন ফার্মটি। অ্যাব্রড সল্যুসানের ম্যানেজিং পার্টনার সজীব শাহারিয়ায় বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগতভাবে ভিসা কনসালটিংয়ের কাজের অভিজ্ঞতা পাঁচ বছর। এই প্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতা এক বছর। আমরা যা করি অস্ট্রেলিয়া সরকারের নিয়ম মেনেই করি। এখানে প্রতারিত হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এছাড়া আমাদের অস্ট্রোলিয়া অফিস রয়েছে। সেখানে গিয়ে কেউ বিপদে পড়লে আমরা তাদের সাহায্য করি। বাংলাদেশে বনানীতে, কানাডা এবং অন্ট্রেলিয়ায় এর অফিস রয়েছে।’ সজীব শাহারিয়ায় আরও বলেন, ‘এছাড়া আমরা কানাডা, বেলজিয়াম, জার্মানি, সুইডেন, নরওয়ে এবং অস্ট্রেলিয়া যেকোনো ভিসা সংক্রান্ত কাজ করে থাকি। অস্ট্রেলিয়াসহ যেকোনো দেশের অভিবাসন বিষয়ে আরও তথ্য জানতে আপনার পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত পাঠাতে পারেন এই ঠিকানায় (info@abroadsolutions.net) অথবা, হালনাগাদ তথ্যের জন্য ভিজিট করতে পারেন (www.abroadsolutions.net) ওয়েবসাইটে।

নতুন বছরে কানাডা সরকারের পরিকল্পনার বিশেষ দিকগুলো হচ্ছে:–

* ফেডারেল স্কিলড ওয়ার্কার ক্লাস, ফেডারেল স্কিলড ট্রেডার্স ক্লাস এবং কানাডিয়ান এক্সপেরিয়েন্স ক্লাসের অধীনে গতবারের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি পরিবার অভিবাসনের সুযোগ পাবে।
* এ বছর প্রভিন্স নমিনি প্রোগ্রামের অধীনে কানাডা সরকার অন্তত ৫১ হাজার নতুন অভিবাসীকে বসবাসের সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
* কুইবেক প্রদেশ তাদের স্কিলড ওয়ার্কার প্রোগ্রামের আওতায় আনুমানিক ২৯ হাজার নতুন অভিবাসনপ্রত্যাশীর জন্য বসবাসের ও কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
* চলতি বছর ২০১৬ সালের চেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা।
* ফ্যামিলি ক্লাস স্পন্সরশিপের আওতায় স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান ও অভিভাবকরা আরও সহজ ও দ্রুত প্রক্রিয়ায় ইমিগ্রেশন করতে পারবেন।
এক্সপ্রেস অ্যান্ট্রি :–গত ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এক্সপ্রেস অ্যান্ট্রি ড্রতে মোট দুই হাজার ৯০২ জন আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এবারের ড্রতে সিআরএস পয়েন্ট নেমে এসেছে ৪৬৮-তে। এই অ্যান্ট্রি মূলত তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। এগুলো হলো- ফেডারেল স্কিলড ওয়ার্কার, ফেডারেল স্কিলড ট্রেডার্স ও কানাডিয়ান এক্সপেরিয়েন্স ক্লাস। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো পেশা বা কোটা পদ্ধতি নেই।
প্রভিন্সিয়াল নমিনি প্রোগ্রাম :–কানাডার মোট ১১টি প্রদেশ অভিবাসনের জন্য মনোনয়ন করতে পারে। এ জন্য একেক প্রদেশ একেক সময় তাদের প্রোগ্রাম উন্মুক্ত করে। অবশ্য প্রদেশ ভেদে শর্ত আলাদা হয়। যোগ্য আবেদনকারীরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে প্রোগ্রামের সময়কাল এবং শর্তগুলো লক্ষ্য রাখতে হয়। অনেক সময় কিছু শর্ত শিথিলযোগ্য হয় আবার কখনো নতুন শর্ত আরোপ করা হয়। যেমন ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রভিন্সিয়াল প্রোগ্রামটি বর্তমানে চালু রয়েছে। খুব শিগগির চালু হবে নোভা স্কশিয়া ও অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল নমিনি প্রোগ্রাম। মাহাতির নামে একজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি কানাডায় স্কলারশিপ নিয়ে পড়ালেখা করতে গিয়েছিলেন। তার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে দোটানায় পড়ে যান যে এখন কি করবেন। এমন সময় তার অ্যাবডট স্যালুশানের সঙ্গে পরিচয় হয়। তারা বিভিন্ন পরামর্শ দেয়। সেই পরামর্শ অনুযায়ী অ্যাপ্লাই করে এখন তিনি কানাডার একজন নাগরিক। কানাডায় তাদের অফিস থাকায় অনেক উপকার হয়েছে বলে জানান তিনি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [১]Share on Google+ [২]Tweet about this on Twitter [৩]Email this to someone [৪]Share on LinkedIn [৫]