সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রফিকুল ইসলাম ও হাসপাতালের অফিস সহকারী ইকবাল হোসেন ও আজাদ মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৯ জুলাই) সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগরের বাসিন্দা মৃত রজব আলীর ছেলে হুমায়ুন কবিরসহ এলাকার ১০ ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সিভিল সার্জনকে। তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রফিকুল ইসলাম। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. রফিকুল ইসলাম জখমী সনদ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ব্যবসা করে রাতারাতি কালো টাকার মালিক হয়েছেন। তিনি রোগীদের বরাদ্দকৃত সরকারি ঔষধ নিজের ভাই-ভাতিজা ও দালাল চক্রকে দিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারের ঔষধের দোকানে বিক্রি করেন। ২৮ জুলাই তিনি তার আপন ছোট ভাইকে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০০ (কার্টুন) ট্যাবলেট দেয়ার স্লিপ প্রদান করেন এবং তার ভাই ১০০ ট্যাবলেট নেন। নিজের পছন্দসই ঠিকাদার নিয়োগ করে হাসপাতালের রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করেন। রোগীদের খাদ্য তালিকায় বোয়াল মাছ দেয়ার কথা থাকলেও পাঙ্গাস মাছ দেয়া হয়। সকালের রোগীদের গুড়া দুধ, বাসি-পচা ব্রেড ও নষ্ট ডিম দেয়া হয়। ঠিকাদারের কাছ থেকে তিনি মাসোয়ারা নেন। হাসপাতালের কর্মচারীরা রোগীদের কাছে সরকারি খাদ্য বিক্রি করেন। হাসপাতালের নার্স, আয়া, ওয়ার্ড বয় টাকার বিনিময়ে ভাল বিছানা দেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, হাসপাতালের অফিস সহকারী ইকবাল হোসেন ও আজাদ মিয়া দুর্নীতির মাধ্যমে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। তারা চাকুরী করার আগে গরীব ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করলে অনেক কালো টাকার সন্ধান পাওয়া যাবে। অফিস সহকারী ইকবাল হোসেনের স্ত্রীও সদর হাসপাতালের চাকুরী করেন। কিন্তু তিনি কোনোদিন হাসপাতালে এসে দায়িত্ব পালন করেন না। তবে প্রতিমাসে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন।  এছাড়াও সদর হাসপাতালের অনেক কর্মচারী দায়িত্ব পালন না করেই অন্য লোকদের দিয়ে কাজ করান। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে জেলার মানুষ সঠিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ও সরকারি ঔষধ পাচ্ছেন না। আরএমও এবং অফিস সহকারীগণ সন্ত্রাসী ও দালালদের নিয়ে আধিপত্য সৃষ্টি করেছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে নানা প্রকার হয়রানি ও ভয় দেখানো হয়। সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগকারী হুমায়ুন কবিরের সবসময় ঔষধের চাহিদা বেশী থাকে। সে সবসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে খারাপ আচরণ করে। সরকারি ঔষধ বিক্রির সুযোগ নেই, কারণ সরকারি ঔষধে মনোগ্রামযুক্ত থাকে। কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তাও সঠিক নয়। হাসপাতালের কর্মচারী সংকট থাকার পরও তারা যথাসাধ্য সেবা দিচ্ছে। হুমায়ুন কবিরসহ আরও কিছু লোক হাসপাতাল চত্বরে এসে খারাপ কাজ করে।’ জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, ‘সদর হাসপাতালের কোন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn