- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

আ’লীগে ফিরলে সংসদ সদস্য পদ হারাবেন সুলতান মনসুর

আরিফুল ইসলাম–১৯৭৫ সালে পটপরিবর্তনের পর ছাত্রলীগকে সংগঠিত রাখতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি ১৯৮৯ সালে ডাকসু’র ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ওয়ান ইলিভেনের পর ‘সংস্কারপন্থি’ অভিযোগে আওয়ামী লীগে কোনঠাসা হয়ে পড়েন। দলীয় কার্যক্রমে তাকে আর সেভাবে সক্রিয় ভূমিকায় পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ থেকে ছিটকে পড়ে দীর্ঘদিন বঞ্চনা ও অবহেলায় থাকা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর সক্রিয় হন সরকারবিরোধী রাজনৈতিক জোট ঐক্যফ্রন্টে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে গণফোরামের সদস্য হিসেবে বিএনপির ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে ভোট যুদ্ধে জয়ী হয়ে চমক তৈরি করেন সাবেক এ ছাত্রলীগের নেতা। সম্প্রতি আবারও তিনি আলোচা তৈরি করেছেন, জোট ও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে হিসেবে শপথ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে। মনসুরের ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, এরই মধ্যে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং পুরনো দলে ফিরতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় প্রশ্ন ওঠেছে, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর যদি আওয়ামী লীগে ফিরে যান, তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে কিনা।

সংবিধান অনুযায়ী, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। এ বিষয়ে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়- ‘কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-(ক) উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা (খ) সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।’ এই বিষয়ে গণতান্ত্রিক আইন ছাত্র সমিতির কার্যকরী সভাপতি পুলক আশরাফ বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ মতে দল থেকে পদত্যাগ করলে সেই সাংসদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। তবে, সে যদি শপথ নেয় বা দল থেকে তাকে বহিস্কার করা হয় তাহলে কি হবে সে বিষয়ে বিস্তর কোন ব্যাখ্যা নেই। সংবিধানে বলা আছে, দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হয়ে সংসদে দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে তার আসন শূন্য হয়ে যাবে। পুলক আশরাফ বলেন, শপথ নেয়া আর ভোট দেয়া এক বিষয় নয়। যদি তিনি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যান এবং দলত্যাগ করেন তবে তার আসন শূন্য হবে কি না তেমন সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই। কিন্তু গণফোরাম তার বিরুদ্ধে গেলে হয়ত তার সদস্যপদ বাতিল হতে পারে। সেক্ষেত্রে তার আসনে পুনঃনির্বাচন করতে হবে। সেখানে তিনি আবারও চাইলে প্রার্থী হতে পারবেন। এর আগে গত শুক্রবার (২৫ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় গণভবনে গিয়েছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা সুলতান মো. মনসুর আহমেদ। সাক্ষাতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন। পরে খবর চাউর হয়, সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগে ফিরছেন। পুরনো ঘরে ফিরে শিগগিরই রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন তিনি। এবিষয়ে সুলতান মনসুর বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্যানেল থেকেই আমি ভিপি নির্বাচিত হয়েছি। নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে নেতা বানিয়েছেন। ছাত্রলীগের প্যানেলকে নির্বাচিত করার কোনো দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব এলে তা অবশ্যই গ্রহণ করবো।’ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো আওয়ামী লীগ ছাড়িনি। আওয়ামী লীগ আমাকে বহিস্কারও করেনি।’

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ২০০৯ সালের সম্মেলনে বাদ পড়েন দলীয় পদ থেকে। সেনাসমর্থিত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য দলে এ অবস্থা হয় তার। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [১]Share on Google+ [২]Tweet about this on Twitter [৩]Email this to someone [৪]Share on LinkedIn [৫]