উল্লেখ্য, পর্যবেক্ষকদের অনেকে বলছেন, বাংলাভাষী মুসলমানরা ভারতের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে দাবার ঘুঁটি হয়ে উঠেছে। আগেও কমবেশি ছিল, কিন্তু আসামের পথ দেখানোর পরে এখন সারা ভারতে বিশেষ করে বিজেপি’র মধ্যে ‘বাংলাদেশি’ নামে বাংলাভাষীদের বিষয়ে খেদাও ধরনের একটা প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। এমনকি রাজস্থানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাব চন্দ্র কাটারিয়া ইতিমধ্যে তার রাজ্যে সিটিজেন লিস্ট করা শুরু করে দিয়েছেন। রাজস্থানের ঘোষিত লক্ষ্য হচ্ছে, ‘রাজ্যে যেসব বিশ্বাসঘাতক ঘোরাঘুরি করছে, তাদের যাতে সহজে শনাক্ত করা যায়।’ এনডিটিভি’র ওই খবরে বলা হয়, আসামের সিটিজেন লিস্ট একটা বিরাট বিতর্ক তৈরি করেছে। মমতা ব্যানার্জি যিনি একদা ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলে লোকসভার আসন থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। সেই মমতা এখন সিটিজেন লিস্ট দিয়ে জনগণকে বিভক্ত করা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার অভিযোগ তুলছেন বিজেপি’র বিরুদ্ধে। মমতার সমালোচনা করে বিজেপি বস অমিত শাহ সাফ বলেছেন, এই অনুশীলনের লক্ষ্য হলো অবৈধ বাংলাদেশিদের ছুড়ে ফেলা। আর কেবল বিজেপি সরকারেরই সেই সাহস আছে যে ওই অনুশীলনের দাড়ি কমা শেষ না করা পর্যন্ত তারা থামবে না। এ বিষয়ে কংগ্রেস বলেছে, তারা এজন্য উদ্বিগ্ন যে, এনআরসি ইস্যুকে এতটাই খারাপভাবে পরিচালনা করা হয়েছে, সেখানে ধর্ম পরিচয়টাকেই বড় করে তোলা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেছেন, যে ধরনের রাজনৈতিক মেরুকরণ করা হয়েছে এবং তা যেভাবে খেলিয়ে তোলা হচ্ছে তাতে কংগ্রেস শঙ্কিত।
আসামের পর এবার দিল্লিতে অবৈধ বাংলাদেশি খেদাও শোর
Posted Onআসামে ৪০ লাখ তথাকথিত অবৈধ বাংলাদেশি চিহ্নিত হওয়ার পর দিল্লিতে একই ধরনের তালিকা তৈরির শোর তুললো ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে বিজেপি’র দিল্লি প্রধান মনোজ তিওয়ারি বুধবার লেখা এক চিঠিতে দাবি করেছেন, দিল্লিতেও হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা এসে ভিড় করেছে। এদের চিহ্নিত করতে একটি সিটিজেন রেজিস্টার খোলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গতকাল এনডিটিভি এই খবর দিয়ে বলেছে, ২০১৯ সালের বিগ শো ডাউনকে (লোকসভার নির্বাচন) সামনে রেখে বিজেপি আসামের মতো দিল্লিতেও একই ধরনের একটি বুলন্দ আওয়াজ তুলতে চাইছে। এনডিটিভি বলেছে, পিচ রেডি করা আছে। এখন ব্যাটিং করলেই হলো। ওই চিঠিতে তিওয়ারি বলেছেন, কথিত অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের হাতে বৈধ আধার কার্ড ও রেশন কার্ড রয়েছে। আসামের বিতর্কিত ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি লিখেছেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে এই অবৈধ বিদেশিরা যে দিল্লির আইনশৃঙ্খলার প্রতি হুমকি সেটা স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সুতরাং বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করে তাদের তালিকাভুক্ত করতে ভারতের অন্য কয়েকটি রাজ্যের মতো আপনিও একই ধরনের ব্যবস্থা নিন। এনটিভি বলেছে, এমনটা মোটেই নয় যে, চিত্রাভিনেতা কাম রাজনীতিবিদ তিওয়ারি যে প্রথম এ রকম একটি পিচে খেলতে নেমেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলিপ ঘোষও একই সুরে বলেছেন, তার দল রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে পারলে তিনিও একই পদক্ষেপ নেবেন।