নোবেল জয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর এবার জাতীয় সংসদেও সমালোচনার সম্মুখীন হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। একইসঙ্গে ইউনূসের প্রসংসা করায় অর্থমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়। জাতীয় সংসদে রোববার বিকেলে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ বক্তব্যে এই সমালোচনা করেন রাজশাহী থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশের ওয়ার্কার পার্টির সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাহ। এ সময় অর্থমন্ত্রী সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

ইউনূসের সমালোচনা করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী কেন প্রফেসর ইউনূসের প্রশংসা করলেন তা বুঝতে পারছি না। তিনি (ড. মোহাম্মদ ইউনূস) মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন কিনা তা আমার জানা নেই। কারণ তাকে কোনো দিন শহীদ মিনারে যেতে দেখিনি। তাই আমরা তাকে সন্মান জানাতে যাব না, প্রশংসাও করতে যাব না।

তিনি বলেন, এ সংসদে আমরা অনেকবার ইউনূসের সমালোচনা করেছি। কিন্তু হঠাৎ করে অর্থমন্ত্রী কেন ফজলে হোসেন আবেদ ও ড. ইউনূসের প্রশংসা করলেন। এই ইউনূসের কারণে পদ্মা সেতুর কাজ আটকে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখিয়ে দিয়েছি নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারি। বাদশাহ বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন বিশ্বব্যাংক সব সময় শর্তহীন ঋণ দেয়। এটি ঠিক নয়। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে দুর্নীতিতে ফার্স্ট হয়েছে। এ জন্য তাদের অভিনন্দন জানানো উচিত। শিক্ষানীতির আলোকে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মুক্তমনা অনেককেই চাপাতির তলায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। এখানে (সংসদে) শিক্ষামন্ত্রী নেই। আমি বলতে চাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি জঙ্গিবাদীদের চাপাতির তলায় পড়েছে?

হেফাজতে ইসলামের সমালোচনা করে বাদশাহ বলেন, তারা (হেফাজত) শাপলা চত্বরে ২৯টি দাবি করেছিল। তাদের (হেফাজত) দাবি অনুযায়ী এনসিটিবি (জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করলো। যারা জাতীয় শিক্ষানীতি মানে না, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হলে তো তাদের পক্ষেই যায়। তিনি আরও বলেন, তারা (হেফাজত) হাইকোর্ট থেকে ভাস্কর্য ভাঙার হুমকি দিচ্ছে। এটি যদি প্রতিরোধ করতে না পারি তাহলে ‘অপরাজেয় বাংলা’ কে মূর্তি বলে ভাঙার দাবি করবে। আপস করলে সুযোগ খুঁজবে। সুতরাং তাদের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এসডিএফ) এক অনুষ্ঠানে দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋণের প্রশংসা করেছিলেন মুহিত। তিনি বলেছিলেন, এক সময় এ দেশে ৭০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল। সেখান থেকে এখন ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। গ্রামীণ ব্যাংক এ ভূমিকাটি সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছে। অর্থমন্ত্রীর ওই বক্তব্যে গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রাজধানীর খামারবাড়িতে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn