- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

এমপি লিটন সাবেক এমপি কাদেরের প্রতিহিংসার শিকার

মেহেদী, শাহীন ও আনারুল-

সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় অভিযুক্ত তিন খুনি। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তারা নিতান্তই হতদরিদ্র ও অশিক্ষিত পরিবারের সন্তান। স্বজনদের এখনও ঘটনার বিস্ময় কাটেনি। গতকাল রোববার ওই তিনজনের স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, তাদের কেউই স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারেননি। ঢাকায় গার্মেন্টে চাকরি করতেন আনারুল ও শাহীন। মেহেদী গার্মেন্টের চাকরি ছেড়ে কিছুদিন রিকশাও চালান। পরিবারগুলো ধারণা করতে পারছে না, তারা সাবেক সংসদ সদস্য ও জাপা নেতা ডা. আবদুল কাদের খানের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হয়েছেন; লিখিয়েছেন খুনির খাতায় নাম। প্রথমে রাশেদুল ইসলাম মেহেদী, শাহীন মিয়া ও আনারুল ইসলাম রানা এবং সর্বশেষ কাদের খান পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ এবং ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে চমকপ্রদ সব তথ্য জানিয়েছেন। ভালো চাকরি ও অর্থবিত্তের লোভ দেখিয়ে ওই তিনজনকে হত্যার মিশনে ভেড়ান কাদের খান। নিজ হাতে শেখান অস্ত্রচালনা।

২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার ‘গাইবান্ধার এমপি লিটন হত্যা: প্রতিহিংসা কাদেরের ওরা লোভে খুনি [১]’ শিরোনামে দৈনিক সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।  

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ছাপড়হাটির খানপাড়ার খানবাড়িতে সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) ডা. আবদুল কাদের খান নিজের দোতলা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষে তিন খুনিকে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিতেন। গুলির শব্দ যেন বাইরে না যায় সে জন্য বাড়ির উঠানে শ্যালো মেশিন চালু করে রাখা হতো।লিটন হত্যার অন্তত চার মাস আগে থেকে বিভিন্ন সময় তিন খুনিকে বাড়িতে এনে এভাবে অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন কাদের খান। সরেজমিন ওই প্রশিক্ষণ কক্ষে গিয়ে একাধিক গুলির চিহ্নও মিলেছে। কাদের খানের ছোট ভাই ইউসুফ খানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম অবশ্য দাবি করেন, ‘এগুলো গুলির চিহ্ন নয়।’ তিনি জানান, তার স্বামী গ্রামে থাকলেও মাঝেমধ্যেই গাইবান্ধা শহরে ছেলের কাছে গিয়ে থাকেন। যখন গ্রামে থাকেন, তখন কাদের খানের দোতলা বাড়ির পাশের একতলায় তারা বসবাস করেন। তবে তাদের বাড়ির আঙিনার মাটি খুঁড়ে যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে, তা তিনি নিজের চোখে দেখেছেন বলে স্বীকার করেন ফিরোজা।

২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার সংসদ সদস্য লিটনকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন কাদের খান। হত্যার পরিকল্পনা ও মিশন বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন, তাও তিনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন। সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান জানান, জবানবন্দি গ্রহণ শেষে রাতে কাদের খানকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ঘটনায় মেহেদী, শাহীন, আনারুল ও কাদের খানের গাড়িচালক আবদুল হান্নান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশ বলেছে, মেহেদী, শাহীন ও আনারুল এমপি লিটন হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [২]Share on Google+ [৩]Tweet about this on Twitter [৪]Email this to someone [৫]Share on LinkedIn [৬]