তন্দ্রা রয়(ফেসবুক থেকে)-

আমার মাঝে মাঝেই রাস্তাঘাটে- বাসে, লেগুনায়…. কিছু মানুষকে থাপ্পর দিতে মন চায়…. নিজেকে কন্ট্রোল করি, ঐ সব কথাবার্তা উপেক্ষা করি,সব সময় পারি না… মাঝে মাঝে মাথার তারে টান পরে… উত্তর দিতে বাধ্য হই….যেমন গতকাল লেগুনায় আসার পথে জ্যামে বসে দেখি একটি মেয়ে বাইক নিয়ে গাড়ি র ফাঁকফোকড় দিয়ে কেটে কেটে সামনে এগুনোর চেষ্টা করছে যথারীতি গাড়ির ধাক্কায় এ্যাক্সিডেন্ট…… মেয়েটার হাত কেটে যায়… মেয়েটা নিজেই নিজের হাতটা কিছু একটা দিয়ে প্যাঁচায় তারপর জ্যাম নামক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইস্তফা দিয়ে বসে রইলো….. লেগুনার হেলপার ছেলেটা নেমে গিয়ে মেয়েটাকে দেখে আসলো,ফিরে এসে মেয়েটা কি করে পড়লো তার বিশদ বর্ননা দেবার পর উপসংহার টানলো এই বলে মেয়েমানুষ হইয়া বাইক চালাইতে গেছে পড়ছে ভালো হইছে… বলে একটা গাঁ জ্বলানো হাসি দিলো, সাথে যোগ দিলো লেগুনাতে বসা ভদ্রবেশী বাকি লোকেরাও,আমি অবাক হয়ে লক্ষ করলাম আমার পাশে বসা দুজন মহিলাও হাসছেন…..এক মূহুর্তে আগুন জ্বলে উঠলো মগজে… ছেলেটাকে ধমক দিয়ে জানতে চাইলাম বাইকের গায়ে কি লেখা থাকে যে এটা পুরুষের চালোনোর যন্ত্র মেয়েদের জন্য নিষিদ্ধ… একটা মেয়ে বাইক থেকে পড়ে ব্যাথা পাইছে তাতে এত হাসির কি? বলার সাথে সাথে গাড়িতে বসা লোকগুলোর বের করা দাঁতগুলো জিপলক হয়ে গেলো….আমার পাশে বসা মহিলাটি তখন বেশ আক্ষেপ নিয়ে বলতে লাগলেন আর বলবেন না এই হেলপার গুলা মহা বজ্জাত মহিলাদের তুলতে চায় না…. খারাপ ব্যাবহার করে…..আমি তখন হাসতে হাসতে তাকে বললাম করবেই তো একটু আগে ও যখন অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে হাস্যরস করছে তখন আপনি হাসছিলেন কেন…. যদি অন্যকে সম্মান দিতে না পারেন তবে নিজেও তা আশা করবেন না…যা আমরা পারিনি তা আমাদের মেয়েগুলা করছে…. উৎসাহ না দেন সমস্যা নাই তাচ্ছিল্য করবেন না…. মহিলা চুপ করে গেলেন,গোটা রাস্তায় লেগুনাতে আর একটা শব্দও হয়নি…সবাই কেমন জানি চুপ মেরে গেলো…. লেগুনা ছুটে চললো তার মত করেই… জন্মদিয়ে নতুন আরেক গল্পের, সেটা না হয় অন্য কোন একদিন বলি….

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn