চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা নিতে চকবাজার থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৭ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান এ আদেশ দেন। আদালত আদেশে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে জাতির জনক ও বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তিসহ মহান মুক্তিযুদ্ধকে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসেবে আখ্যায়িত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সিআরপিসি-১৯৬ ধারায় প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এফ.আই.আর হিসেবে গণ্য করার আদেশ দেয়া হয়। সকালে শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ দায়ের করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আসাদুজ্জামান তানভীর। অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল। বাদী তার অভিযোগে আদালতকে জানান, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষক আনোয়ার হোসেন তার পদোন্নতির আবেদনে আন্তর্জাতিক এক জার্নালে লেখা একটি গবেষণা প্রবন্ধ সংযুক্ত করেন। যেখানে মহান মুক্তিযুদ্ধকে ‘হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তি করেছেন তিনি। এতে নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকরা। এই শিক্ষক আবার ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলারও অন্যতম আসামি।

জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল সমাজতত্ত্বের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য বিভাগীয় সভাপতি বরাবর আবেদন করেন। আবেদনের সময় ‘রিলিজিয়াস পলিটিক্স এন্ড কমিউনাল হারমনি ইন বাংলাদেশ: এ রিসেন্ট ইমপাস’ শিরোনামে একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ পরিবেশন করা হয়। পদোন্নতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গবেষণা প্রবন্ধটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত পরিকল্পনা কমিটিতে মূল্যায়নের জন্য প্রেরণ করা হয়। পরিকল্পনা কমিটি গবেষণা প্রবন্ধটি পর্যালোচনার সময় এটির বেশ কিছু জায়গায় বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তি, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিষয়ে বিতর্কিত ও স্পর্শকাতর বক্তব্য থাকায় অস্বস্তিবোধ করেন। এতে করে কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় পরিকল্পনা কমিটির সভা। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn