বিজয় রায়- ছাতকের দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মানিকগঞ্জ বাজারের নামকরন হয়েছিল সুনামগঞ্জ-৫ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের নাম অনুসারে। এলাকাবাসীর ভালোবাসার প্রতিফলন হিসেবে ২০০১ সালে মানিকগঞ্জ বাজারের এ নামকরন করা হয়। এলাকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এ ভালোবাসার প্রতিদান তাদের নির্মমভাবে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘ এক যুগেও বোকারভাঙ্গা-মানিকগঞ্জ বাজার সড়কের সংস্কারকাজ হয়নি। বর্তমানে এ সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ সড়কে চলাচলকারী ফোরষ্ট্রোকের কয়েক শ’ পরিবহন শ্রমিক এখন বেকারত্বের মুখোমুখি। পাশাপাশি ১৫-২০টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানেুষের দুঃখের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে বোকারভাঙ্গা-মানিকগঞ্জ বাজার সড়ক। জনৈক এক পরিবহন শ্রমিক উপহাস করে বলেন, ছাতকের উন্নয়ন এখন বোকারভাঙ্গা-মানিকগঞ্জ মহাসড়কে হাটছে।
বোকারভাঙ্গা-মানিকগঞ্জ বাজার রাস্তা দিয়ে খাশিপুর, খুরমা, মাধবপুর, ছোট মায়েরকোল, বড় মায়েরকোল মুনিরগাতি, মনিপুর,দরারপার, শেওলাপারা,চেগাপারা, সেনপুর, ভুইগাওঁ, সিংচাপইড় ইউনিয়নের সৈদেরগাওঁসহ মায়েকোল-নোয়াগাওঁ ও মুনিগাতি-নোয়াগাওঁ এলাকার সাধারন মানুষের চলাচলের প্রধান রাস্তা হচ্ছে বোকারভাঙ্গা-মানিকগঞ্জ বাজার। এ সড়ক দিয়ে খুরমা উচ্চ বিদ্যালয়, মুনিরগাতি উচ্চ বিদ্যালয়, খুরমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মায়েকোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুনিরগাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৈদেরগাওঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা যাতায়াত করছে দূর্ভাগ মেনে নিয়ে। এ ছাড়া সড়ক ভাঙ্গার কারনে গাড়ী চলাচল না করায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ পায়ে হেটে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষ এ সড়কটি সংস্কারের দাবী তুলে আসছিল। কিন্তু পল্লী এলাকার মানুষের আর্তনাদ গন্তব্যে পৌছতে পারেনি। ফলে সড়কটি ক্রমেই ভাংতে-ভাংতে ব্যবহারের প্রায় অনুপযোগি হয়ে পড়ে। সড়ক সংস্কারের দীর্ঘসূত্রতা বা এ সড়ক আদৌ বর্তমান সরকারের আমলে হবে কি না এ নিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা সন্দিহান হয়ে পড়েন। ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙ্গে শ্রমিকরা নিজ উদ্যোগে সড়ক সংস্কারের কঠিন ব্রত পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। বোকারভাঙ্গা শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে ও এলাকার সচেতন মানুষের আন্তরিক সহযোগিতায় অদক্ষ হাতে শুরু হয় বোকারভাঙ্গা-মানিকগঞ্জ বাজার সড়কের সংস্কার কাজ। কম টাকায় বেশী কাজ করার জন্য সংস্কার কাজে পরিবহন শ্রমিকরাই রাজ মেস্ত্রীর ভুমিকায় ছিল। সিমেন্ট, বালু ও কনক্রিট দিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা যখন নিজেরাই করছে সড়ক সংস্কার কাজ তখন তাদের মনের জোর ও ধৈর্য্যরে মাত্রাটা কতটুকু প্রবল তা সকলেই অনুভব করার অপেক্ষা রাখে না। বৃহস্পতিবার বোকার ভাংগা শ্রমিক সংগঠনের শ্রমিক জয়নাল হাজারী,আংগুর মিয়া, সুজন মিয়া, জসিম উদ্দিন, মুহিবুর রহমান, আব্দুর রউফ, সুমন মিয়া, নজির, শাহজাহান, জুয়েল মিয়া, কাওছার আহমদ, আজির উদ্দিনসহ সহযোগীরা রাজমেস্ত্রীর সরজ্ঞাম নিয়ে সড়ক সংস্কার কাজে লেগে পড়েন। পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক সংস্কারের কাজে এখানের জনপ্রতিনিধিদের বড়ই লজ্জায় ফেলে দিয়েছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। ভুক্তভোগি এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি পরিবারের জন্য ৩২ লক্ষ টাকা খরছ করে ব্রিজ নির্মাণ করা যায়, আর জনগণের রাস্তা সংস্কার করার প্রয়োজন হয় না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn