- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

জামায়াত নিজ থেকে জোট ছাড়বে না

জামায়াত নিজ থেকে বিশদলীয় জোট ছাড়বে না। বিএনপি যদি বলে তখনই তারা সিদ্ধান্ত নেবে। জামায়াত নিজেদের মধ্যে জোট ছাড়ার ব্যাপারে আলোচনা করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মপরিষদের একজন নেতা বলেন, জামায়াত তো দরখাস্ত করে জোটে যায়নি। তাই দরখাস্ত দিয়ে জোট ত্যাগ করবে না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন জামায়াত ছাড়ার ব্যাপারে বিএনপিতে সিদ্ধান্ত কি হয় তা দেখতে চেয়েছেন। নির্বাচনের আগে একটি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে কামাল হোসেন বলেন, জামায়াতকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হবে তিনি তা জানতেন না। আগে জানলে ঐক্য করতেন না। বিএনপি এ সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। শনিবার কামাল হোসেন বলেন, জামায়াতকে নিয়ে তিনি রাজনীতি করবেন না। জোটে থাকবেন কিনা সেটা অবশ্য খোলাসা করেননি। কামাল হোসেনের সর্বশেষ বক্তব্য নিয়ে জামায়াত আবার আলোচনায় এসেছে। ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে নিবন্ধনহীন জামায়াতের ২২ জন নেতা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জামায়াতকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া নিয়ে বিএনপির ভেতরে ভিন্নমত ছিল। শীর্ষ কয়েকজন নেতা বিপক্ষে থাকলেও কয়েকজন নেতার অতি আগ্রহের কাছে তারা পরাজিত হন। যুক্তি ছিল জামায়াত তো রাজনৈতিক দল হিসেবে এই মুহূর্তে স্বীকৃত নয়।

আদালতের রায়ে জামায়াত নামে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। এই অবস্থায় স্বতন্ত্র অবস্থান থেকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত এই যুক্তিতেই জামায়াতকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হয়। বিএনপি এখন বলছে, জামায়াতকে তারা ধানের শীষ দেয়নি। এই যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য। এরা কারা? কি তাদের পরিচয় সবার জানা। ঢাকা-১৫তে ডা. শফিকুর রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হয়। কে না জানে ডা. শফিক জামায়াতের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে অবশ্য যুদ্ধাপরাধের কোনো অভিযোগ নেই। জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি আগা গোড়াই নেতিবাচক প্রচারণার মুখোমুখি। এটা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও। বিএনপির গায়ে ময়লা লেগেছে এই জামায়াতকে নিয়েই। ভোটের রাজনীতিতে জামায়াত একটা ফ্যাক্টর- এমনটাই বলাবলি ছিল। এখন তো ভোটই নেই। কবে ভোট হবে কে জানে? রাজনৈতিক পণ্ডিতরাও হিসাব মেলাতে ব্যর্থ। পণ্ডিতদের কেউ কেউ বলছেন, জোর যার ভোট তার- এটা অন্তত বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।

জামায়াত নিজেদের মধ্যে ঐক্য এবং ভোট নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছে। তারা মনে করে সরকার এমন কৌশল নেবে- এটা তাদের ধারণার বাইরে। আবার কোনো দাবি না মানা সত্ত্বেও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাবে তারা ভাবতে পারেনি। বিশ দলীয় জোটে শুধু স্বপ্নই দেখানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা কেউ দেননি। নির্বাচনে অংশ নেয়া ঠিক হয়েছে, কি হয়নি এ নিয়ে জামায়াতে যেমন ভিন্নমত রয়েছে, তেমনি বিএনপিতেও এই স্রোত প্রবল। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজ দলের মধ্যেই এখন কোণঠাসা। নির্বাচনে শেষ দিন পর্যন্ত থাকার ঘোষণাকে কেউ কেউ সাধুবাদ জানান। তারা অবশ্য এটাও বলেন, একদম হাত-পা গুটিয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার মধ্যে কি যুক্তি ছিল বিএনপি নেতারাই ভাল বলতে পারবেন। প্রার্থীরা জেলে যাচ্ছে। বাড়িতেও হামলা হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে যেতে পারছে না। এটা দেখার পরও কৌশলের কোনো পরিবর্তন করেননি বিএনপির শীর্ষ নেতারা। যদিও এর পক্ষে হাজারো যুক্তি রয়েছে। বেশির ভাগ নেতা-কর্মীই মনে করেন নির্বাচনে না গেলে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করতে পারতো না। এই সরকার ভোটকে কোথায় নিয়ে গেছে, দিনে-রাতের ভোট কি দেখতে পারতো? পশ্চিমা বিশ্বও তাজ্জব হয়েছে নির্বাচন দেখে। তারাই তো সব সময় বলতো, ২০১৪ সালে নির্বাচন বয়কট করাটা বিএনপির জন্য মস্তবড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। মির্জা ফখরুল ভোটের পর বলেছেন, খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল তা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না।সূত্র:মানবজমিন

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [১]Share on Google+ [২]Tweet about this on Twitter [৩]Email this to someone [৪]Share on LinkedIn [৫]