নির্বাচন পরবর্তী বিএনপি পুনর্গঠনের বিষয়টি সামনে আসার পরপরই জাতীয় স্থায়ী কমিটির শূন্য পদে কারা আসতে পারেন তা নিয়ে আবারো আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের সূত্র জানায়, সহসাই মূলদল পুনরায় গঠন প্রক্রিয়া হাত দেবে না বিএনপির হাইকমান্ড। তার আগে অঙ্গ সংগঠনগুলো সাজানোর বিষয়ে ভাবছেন তারা। তবে নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যে স্থবিরতা সৃষ্টি হচ্ছে তা কাটাতেই তরুণ নেতাদের প্রাধান্য দিয়ে শূন্য পাঁচ পদ পূরণের চিন্তা করছেন দলের নীতিনিধার্রকরা। এই পাঁচ পদে যাদের নাম চাউর হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছেন জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ট দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এছাড়া দলের ভেতরে ও বাইরে বিশেষ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীরও আগ্রহ রয়েছে বিএনপির রাজনীতিতে জিয়া পরিবারের বড় পুত্রবধু ডা. জোবাইদা রহমান সক্রিয় হোক। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে একবার তার মনোভাবও প্রকাশ করেছিলেন। ক্লিন ইমেজের জোবাইদা রহমান বিএনপির হাল ধরুক এটা দলের অভ্যন্তরেও এক ধরণে চাপ রয়েছে। কিন্তু জিয়া পরিবারের অনাগ্রহের কারণেই তিনি রাজনীতিতে আসছেন না। তবে ইতিমধ্যে জোবাইদা দলের প্রাথমিক সদস্য পদ নিয়েছেন। এছাড়া আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলী রহমান সিথি রাজনীতিতে আগ্রহ রয়েছে। তাকে হয়তো এবার দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে আনার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের উপর।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ জাতীয় কাউন্সিলে পর থেকে বিএনপির ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির দুটি পদ ফাঁক রেখেই কমিটি দেন খালেদা জিয়া। বাকি ১৭ সদস্যের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ ও এমকে আনোয়ার মারা গেছেন। ফলে বর্তমানে পাঁচটি পদ ফাঁকা। লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অসুস্থতার কারণে দলে নিয়মিত সময় দিতে পারেন না। স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ কমিটি ঘোষণার আগে থেকেই ভারতে আছেন। কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন তাও অজানা। স্থায়ী কমিটির কোনো বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। দীর্ঘদিন ধরে সরকার ও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন স্থায়ী কমিটির এই দুই সদস্য অবসরে যেতে চান। ফলে বিএনপির সর্ব্বোচ নীতিনির্ধারণী ফোরামে চলছে এক ধরণে স্থবিরতা। খালেদা জিয়া কারাগারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে। ফলে স্থায়ী কমিটির ৯টি পদে এক ধরণের শূণ্যতা বিরাজ করছে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের চেয়ে থাকতে হয় লন্ডনের দিকে। জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার দলের সিনিয়র এক নেতাকে জানিয়েছেন দলের বিষয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। বিএনপির বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ১৯ মার্চ। ২০১৬ সালে ১৯ মার্চ ৬ষ্ঠ কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে পাঁচ শতাধিক নেতাকে নিয়ে জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় নির্বাহী কমিটি তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হবে এবং পরবর্তী জাতীয় নির্বাহী কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত এ কমিটিই দায়িত্ব পালন করবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn