- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

তাজিন আহমেদ আর নেই

ছোট পর্দার তারকা তাজিন আহমেদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৩ বছর। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবশেষে বিকেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা সকাল আহমেদ ও অভিনয়শিল্পী রওনক হাসান।  হাসপাতাল থেকে রওনক বলেন, ‘অসুস্থতার খবর পাওয়ামাত্রই আমরা হাসপাতালে আসি। একটু আগে চিকিৎসক আমাদের জানিয়েছেন, তাজিন আর নেই।’ তাজিন আহমেদের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে যান অভিনেতা রিয়াজ, রওনক হাসান, নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ, সকাল আহমেদ, অভিনেত্রী জেনীসহ অনেকেই। তাজিন আহমেদ অভিনয়ের পাশাপাশি সাংবাদিকতা ও অনুষ্ঠান উপস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালী জেলায় জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রীর শুরুটা মঞ্চনাটক দিয়ে। এরপর ১৯৯১ সালে বিটিভির ‘চেতনা’ নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থাপনা শুরু করেন। তাঁর মা দিলারা জলির প্রোডাকশন হাউস ছিল। মায়ের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন। টিভি নাটকে অভিনয় ও উপস্থাপনা তাঁকে পরিচিতি এনে দেয়। তাঁর অভিনীত ‘আঁধারে ধবল দৃপ্তি’ অনেক বেশি প্রশংসিত হয়।

মঞ্চনাটকে তাজিন আহমেদের শুরুটা হয় নাটকের দল ‘নাট্যজন’-এর মাধ্যমে। এই দলের হয়ে বেশ কয়েকটি প্রযোজনায় তিনি অভিনয় করেন। এরপর আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে ‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটকেও অভিনয় করেন তিনি। এতে তিনি বলাকা চরিত্রে অভিনয় করেন। টিভি নাটকে আসেন ১৯৯৭-৯৮ সালে। হ‌ুমায়ূন আহমেদের নাটক ‌‌‘নীলচুড়ি’তে অভিনয় করেও বেশ আলোচিত হন। তাঁর সর্বশেষ অভিনীত ধারাবাহিক নাটক ‘বিদেশি পাড়া’। তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি মিডিয়া থেকে দূরে ছিলেন। অভিনয় ও উপস্থাপনার বাইরে লেখালেখির কাজেও যুক্ত ছিলেন তাজিন। তাঁর লেখা অনেক নাটক টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে। এনটিভিতে প্রচারিত ‌‘টিফিনের ফাঁকে’ অনুষ্ঠানে টানা ১০ বছর উপস্থাপনা করেন তিনি। একাত্তর টিভিতেও ‘একাত্তরের সকালে’ হাজির হয়েছেন তিনি। তাজিন আহমেদের জন্ম নোয়াখালীতে হলেও বেড়ে উঠেছেন পাবনায়। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করা এই অভিনেত্রী অভিনয়ের পাশাপাশি সাংবাদিকতায়ও যুক্ত ছিলেন। ভোরের কাগজ ও প্রথম আলোতে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। পাক্ষিক আনন্দ ভুবনে নিয়মিত কলাম লিখতেন তিনি। তাজিনের লেখা ও পরিচালনায় তৈরি হয় ‘যাতক’ ও ‘যোগফল’ নামে দুটি নাটক। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘অনুর একদিন’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘হুম’, ‘সম্পর্ক’ ইত্যাদি। তাজিন আহমেদের মরদেহ আজ মঙ্গলবার রাত ১১টা পর্যন্ত ঢাকার উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালের সামনে রাখা হবে। বন্ধুবান্ধব, পরিচিতজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা এই সময়ের মধ্যে তাঁকে শেষবারের মতো একনজর দেখার সুযোগ পাবেন। এখানকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের হিমঘরে। কাল বুধবার দিনের যেকোনো সময় তাজিন আহমেদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বনানীতে বাবার কবরস্থানের পাশে, না হয় উত্তরায় দাফন করা হতে পারে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [১]Share on Google+ [২]Tweet about this on Twitter [৩]Email this to someone [৪]Share on LinkedIn [৫]