যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে ব্রিটিশ সরকারের একটি বাড়ি বরাদ্দ পেলেও সেই বাড়িতে না থেকে বিলাসবহুল দুটি বাড়িতেই থাকছেন তারেক। লন্ডনে তারেক রহমানের দুটি বাড়ির ভাড়া, চিকিৎসা খরচ, সংসার খরচ ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ মিলিয়ে মাসে কমপক্ষে ছয় হাজার পাউন্ড প্রয়োজন হয়। এর একাংশ আসে প্রবাসী বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে। বাকি অংশ যায় দেশ থেকে। অনুসন্ধানে জানা গেছে দেশ থেকে লন্ডনে তারেকের কাছে পাঠানোর সিংহভাগ অর্থ আসে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাদক ব্যবসা থেকে। বিশেষ করে টেকনাফের বিএনপির ইয়াবা গডফাদাররাই তারেকের অর্থের প্রধান যোগানদাতা। সম্প্রতি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার বিএনপির মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াবা ব্যবসায়ী লায়লা সুলতানা লিজাকে ২০০ পিস ইয়াবাসহ আটকের পর ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। আটকের পর লিজা জানান, বিএনপির রাজনীতি করতে হলে প্রচুর টাকার দরকার। আর বিএনপির যারাই ইয়াবা ব্যাবসার সাথে জড়িত তাদের সবাইকেই নাকি মোটা অঙ্কের একটা ভাগ লন্ডনে তারেক রহমানকে পাঠাতে হয়। কিন্তু সম্প্রতি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালু হওয়াতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কারবার প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। অধিকাংশ ইয়াবা ব্যবসায়ীরাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আটক হয়েছে এবং শীর্ষ কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে বিপাকে পরে যায় তারেক। গত এক মাস ধরে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা লন্ডনে টাকা পাঠাতে না পারার কারণে তারেক অর্থনৈতিক খরার সম্মুখীন হয়েছেন। এই অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে তারেক বিএনপির ডোনারদের কাছে ধর্ণা দেওয়া শুরু করেন।
সম্প্রতি তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ এবং তারেকের অর্থের প্রধান যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত আবদুল আউয়াল মিন্টুর সাথে বৈঠকে বসতে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল এবং দলের স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে নির্দেশ দেন। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে তারেকের নির্দেশের পরই ব্যংককে বৈঠকে বসেন তারা। শীর্ষ এই তিন নেতা ছাড়াও বিএনপিতে তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ আরও কয়েকজন নেতা এখন ব্যাংককে। তারেক জিয়ার ব্যবসা দেখভাল করে, সিঙ্গাপুরে থাকা দুই ব্যবসায়ীও সিঙ্গাপুর থেকে ব্যাংককে উড়ে গেছেন বলে জানা গেছে। তারেকের অর্থনৈতিক খরা কাটিয়ে উঠার উপায় হিসেবে প্রবাসী বিএনপি সমর্থকদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ আরো বৃদ্ধির জন্য মত দেন তারা। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিএনপির প্রবাসী সমর্থক জানান, দল ক্ষমতায় এলে বিশেষ ক্ষমতা ও সুবিধা পাওয়ার প্রলোভনে অনেক দিন ধরেই লন্ডনে তারেকের কাছে অর্থ প্রেরণ করে যাচ্ছেন, কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় দলের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দিন দিন ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় লন্ডনে তারেকের কাছে অর্থ পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করেন অনেকে। এখন দেখার অপেক্ষা লন্ডনে তারেকের বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমাণ অর্থের যোগান কিভাবে হয়।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn