আগামী পাবলিক পরীক্ষা থেকে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন (এমসিকিউ) তুলে দেয়ার ইঙ্গিত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তবে এটি নিয়ে আরো পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি  মিললেই এ পদ্ধতি বাতিল করার পক্ষে মত আসবে। ত বে পুরোপুরি বাতিল হবে নাকি আংশিক সেটি অবশ্যই পরিষ্কার করে বলেননি শিক্ষামন্ত্রী। গতকাল সচিবালয় চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও বাস্তবায়ন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা জানান।বৈঠকে পুলিশ, র‌্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, এমসিকিউ এখন যে পর্যায়ে আছে এটিকে স্ট্যান্ডার্ড বলাও যাবে না। তাই পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ করতে পাবলিক পরীক্ষাগুলোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার আলোকে চলতি বছর শুরু হতে যাওয়া জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় পরিবর্তন আনা হবে। তিনি বলেন, বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আরও সভা করা হবে। সেখানে অনেকের মতামত নিয়ে কী কী পরিবর্তন আনা যায়, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অনুষ্ঠানে পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতামতগুলো নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরার কথা জানান সচিব। তিনি বলেন, আশা করি বের করে নিয়ে আসবো। তবে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তা যেন আগের থেকে নেয়ার কথা জানান কর্মকর্তারা। তাহলে তা বাস্তবায়নে সুযোগ পাওয়া যায়। চলতি বছর নির্বাচনী বছর হওয়ায় হুট-হাট কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়ার পক্ষে মত দেন। তাহলে কোনো একটি ভুল সিদ্ধান্তকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করতে পারে। সচিব বলেন,এখন থেকে যা হবে, তা সময় নিয়েই হবে। আপনাদের আগেই থেকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, যারা প্রশ্নফাঁস করতে চাই, তারা এখনও সুযোগের অপেক্ষায় আছে একটু যদি গ্যাপ পাই তাহলে আবার তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে। এজন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সবাইকে এ বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।
বৈঠক থেকে বের হয়ে সচিব সাংবাদিকদের এমসিকিউয়ের ব্যাপারে আরও করে পরিষ্করা বলেন, আসন্ন জেএসসি ও জেডিসিতে এমসিকিউ না রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে আমরা এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতে অন্যান্য পরীক্ষায়ও বড় ধরনের পরিবর্ত আনা হবে। এবার জেএসসি ও জেডিসিতে নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্ন তুলে দিয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন দেয়া হবে। প্রায় ৩১ লাখ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে- জানান সচিব। তার আগে গত ৩রা এপ্রিল প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এ বছর থেকেই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায়ও এমসিকিউ থাকছে না বলে জানিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। গতকালের সভায় পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নকাঠামোতে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগের সব প্রশ্নফাঁস হওয়ার ঘটনা যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, শুধু নৈর্ব্যত্তিক (এমসিকিউ) পরীক্ষার আগে কিছু মানুষের হাতে তা চলে গেছে। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আমরা এটি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আগামী জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় বড় ধরনের সংস্কার ও পরিবর্তন আনা হবে। তিনি বলেন, আগামী জেডিসি-জেএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউতে নম্বর কমানো হতে পারে বা এক কথায় উত্তর যুক্ত করা হতে পারে, অথবা সৃজনশীল আকারে প্রশ্ন দেয়া হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। অতি শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, পুলিশ, র‌্যাব, এনএসআই, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকতা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা প্রমুখ।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn