- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

প্রত্যেক নাগরিক সমান অধিকার পাবে :প্রধানমন্ত্রী

গতকাল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা —ফোকাস বাংলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার পাবে। বাংলাদেশে ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার ও সম-উন্নয়ন নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য। সংশ্লিষ্ট সকলকে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সমতলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমরা উন্নয়নের কথা বলি তখন আমরা জাতি, ধর্ম-বর্ণ, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের কথাই বলি।’ ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৫শ শিক্ষার্থীকে অনুষ্ঠানে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এখানে কাউকে এটা মনে করলে চলবে না যে, আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বা আমরা অবহেলিত সেটা ভাবলে চলবে না। সকলকে ভাবতে হবে, এই দেশের নাগরিক সবাই এবং প্রত্যক নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে। সকলেই সমান অধিকার ভোগ করবে বাংলাদেশে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর নিজস্ব পেশাকে ধরে রেখে এর সাথে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বৈচিত্র্যের মাঝেই ঐক্য হচ্ছে- বাংলাদেশের সংস্কৃতির এক উজ্জ্বলতম বৈশিষ্ট্য। নানা মানুষ, নানান ধর্ম, ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস- সবকিছু মিলে যে বৈচিত্র্য এটা কম দেশেই পরিলক্ষিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য তার সরকার বৃত্তি দিচ্ছে এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সাধারণ জনগণের জন্য ব্যাপকভাবে সাধারণ বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সারাদেশে প্রায় দুই কোটি ৪ লাখ শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পাচ্ছে এবং বিভিন্ন ট্রেডে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. সাজ্জাদুল হাসান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) খলিলুর রহমান। অনুষ্ঠানে ৫শ শিক্ষার্থীকে ২৫ হাজার টাকা করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার বৃত্তি প্রদান করা হয়। আগামী বছর থেকে বৃত্তিপ্রাপ্তের সংখ্যা ২ হাজারে উন্নীত করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং সচিববৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক কোরের ডিনসহ বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, সমতলের ৫৫টি জেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০০২ সালে তত্কালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার কর্মসূচিটি বন্ধ করে দেয় এবং ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এসে এটি চালু করে এবং তা অদ্যাবধি অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৯ সাল থেকে এ কর্মসূচির আওতায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫শ বৃহত্ আকারের আয়বর্ধনমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফিরে

যেতে মালয়েশিয়ার সহায়তা

চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফিরে যাবার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নূর আশিকিন বিন্তি মোহাম্মদ তাইব গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে বিদায়ী সাক্ষাত্ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন জানানোর জন্য মালয়েশিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। তবে এতে দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, এ ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের সময়ে আপনি চোখ বন্ধ করে রাখতে পারেন না। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বৈঠকে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে একজন বিশাল হূদয়ের মানুষ হিসাবে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নুল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [১]Share on Google+ [২]Tweet about this on Twitter [৩]Email this to someone [৪]Share on LinkedIn [৫]