- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

বিশ্বম্ভরপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের

বিশ্বম্ভরপুরে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই ক্লাসের আরেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। প্রায় তিন সপ্তাহ আগের এই ঘটনা সামাজিক সালিশে নিষ্পত্তির কথা বলে মামলা এড়াতে চেয়েছিল অভিযুক্তের পরিবার। তবে তারা সালিশের রায় না মানায় স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অভিযোগে জানা যায়, বিশ্বম্ভরপুরের গুলগাঁও গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে নূরে আলম গত ৯ অক্টোবর রাতে নোট বই নেওয়ার কথা বলে তার সহপাঠী ওই স্কুলছাত্রীর বাড়িতে আসে। পরে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে গিয়ে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি চিৎকার করার চেষ্টা করলে আসামি তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে খুন করার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে মেয়েটির চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর গত ১১ অক্টোবর গ্রামে সালিশ বৈঠক হয়। স্কুলছাত্রীর প্রতিবেশী আব্দুস সালাম জানান, তার বাড়িতেই সালিশ বৈঠক হয়। সালিশে মৌখিকভাবে ৭ লাখ টাকা কাবিনের মাধ্যমে বিয়ে ও ১৫ শতক জমির বিনিময়ে নিষ্পত্তির রায় দেন গ্রামের মুরুব্বিরা। কিন্তু ছেলেপক্ষ সালিশের রায় মানেনি। তিনি আরও জানান, মেয়েটির পরিবার গরীব, তার বাবা সিলেটে দিনমজুরের কাজ করে সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। ধর্ষণের ঘটনাটি সালিশে নিষ্পত্তির কথা বলে এতদিন স্কুলছাত্রীর পরিবারকে মামলা করা থেকে বিরত রাখে ছেলের পরিবারের লোকজন। সালিশ বৈঠকে বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় গত ১৫ অক্টোবর সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন স্কুলছাত্রীর মা। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে জোর করে ঘর থেকে বের করে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনার জন্য দায়ী নূরে আলমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে দুই শিক্ষার্থী যে স্কুলে পড়ালেখা করে তার প্রধান শিক্ষক জানান, ছেলে-মেয়ে দুজনেই তার প্রতিষ্ঠানে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা চলতি বছর এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। মেয়েপক্ষ ও গ্রামবাসী মৌখিকভাবে বিষয়টি তাকে জানিয়েছে। সালিশে বিচার না পেয়ে মেয়ের পরিবার আদালতে মামলা করেছে। অভিযুক্ত স্কুলছাত্র নূরে আলমের মা মোছাম্মৎ জোবেদা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা পুরোটাই সাজানো নাটক। গ্রামের মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে ছেলেটাকে বিয়ে করিয়ে তার জীবনটা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য।’ সুনামগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ আদালতে মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার কোনও কাগজ এখনও বিশ্বম্ভরপুর থানায় যায়নি। তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রীর পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায় সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [১]Share on Google+ [২]Tweet about this on Twitter [৩]Email this to someone [৪]Share on LinkedIn [৫]