গতকাল দলীয় মাত্র ২৭ রানে সাত উইকেট খুইয়ে আরো বড় লজ্জার মুখে পড়ে ভারত। তবে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনির অর্ধশতকে ১০০ রানের কোঠায় পৌঁছে স্বাগতিকরা। ছয় নম্বরে ব্যট হাতে ৮৭ বলে ৬৫ রান করেন ধোনি। এতে ধোনি হাঁকান ১০টি চার ও দুটি ছক্কা। আর ৩৮.২তম ওভারে ১১২ রানে গুঁড়িয়ে যায় ভারতের ইনিংস। নিজ মাটিতে ওয়ানডেতে এটি তাদের তৃতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। লজ্জার এমন শীর্ষ রেকর্ডটি তাদের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। ১৯৮৬তে কানপুরে ৭৮ রানে ইনিংস গুটায় ভারত।
ধর্মশালায় গতকাল টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান শ্রীলঙ্কার নতুন অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। আর স্কোর বোর্ডে ১৬ রান জমা পড়তেই সাজঘরে ফেরেন ভারতের ব্যাটিংক্রমের শুরুর পাঁচ খেলোয়াড়। ওয়ানডে ইতিহাসে এতো কম রানে ভারতের শীর্ষ পাঁচ উইকেট পতনের নজির ছিল না। সর্বশেষ ১৯৮৩’র বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে শুরুর ১৭ রানে পাঁচ উইকেট খোয়ায় ভারত। অবশ্য ওই খেলায় ম্যাচজয়ী ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেন ভারত অধিনায়ক কপিল দেব। ওয়ানডে ইতিহাসে লঙ্কানরা এর চেয়ে কম রানে প্রতিপক্ষ দলের শুরুর পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিল একবারই। ২০০৩-এ আইসিসির সহযোগী দেশ কানাডার বিপক্ষে ম্যাচে ইনিংসের শুরুর ১২ রানে পাঁচ উইকেট তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। গতকাল শ্রীলঙ্কার বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৩ রানে চার উইকেট নেন পেসার সুরাঙ্গা লাকমাল। ভারতের ইনিংসে ব্যক্তিগত এক অঙ্কের রানে সাজঘরে ফেরেন ৮ ব্যাটসম্যান। এতে চার জনের পাশে শোভা পাচ্ছিল ‘০’। ওয়ানডেতে ভারতের ব্যাটিংক্রমের শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের এক অঙ্কের রানে উইকেট খোয়ানোর মাত্রই পঞ্চম নজির এটি। আর গত ১৫ বছরে ভারতের এমন ভোগান্তির ঘটনা দেখা গিয়েছে একবারই। ২০১২তে পাকিস্তানের বিপক্ষে চেন্নাইয়ে এমনটি দেখায় ভারতীয়রা। গতকাল ভারতের শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানের সাকুল্যে সংগ্রহ ছিল ১৩ রান। ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসে শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানের একত্রে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড এটি। ইনিংসের শুরুর পাঁচ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ছিল ২/২। ওয়ানডে ইতিহাসে গত ১৬ বছরে যে কোনো দলের সর্বনিম্ন। এমন সর্বশেষ ঘটনায় ২০০১-এ ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে পাঁচ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১/১। গতকাল ভারতের ইনিংসে লজ্জার রেকর্ড রয়েছে আরো। ইনিংসের শুরুর ১০ ওভারে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১/৩-এ। স্কোরটি ওয়ানডেতে গত ১৬ বছরে ভারতের সর্বনিম্ন।
কার্তিকের লজ্জার ‘০’
গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ১৮ বল মোকাবিলা শেষে ‘ডাক’ মারেন দিনেশ কার্তিক। ওয়ানডেতে ভারতের সবচেয়ে বেশি বল খেলে শূন্য রানে উইকেট খোয়ানোর রেকর্ড এটি। আগের রেকর্ডটি ৪৩ বছরের পুরনো। ১৯৭৪-এ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ১৭ বল মোকাবিলায় ‘০’ রানে উইকেট খোয়ান ভারতীয় ব্যাটসম্যান একনাথ সোলকার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: শ্রীলঙ্কা, ফিল্ডিং
ভারত: ৩৮.২ ওভার; ১১২ (রোহিত ২, ধাওয়ান ০, আইয়ার ৯, কার্তিক ০, পান্ডিয়া ২, ধোনি ৬৫, হারদিক ১০, ভুবনেশ্বর ০, কুলদীপ ১৯, বুমরাহ ০, চাহাল ০*, লাকমাল ৪/১৩, ফারনান্ডো ২/৩৭)।
শ্রীলঙ্কা: ২০.২ ওভার; ১১৪/৩ (থারাঙ্গা ৪৯, গুনাতিলাকা ১, থিরিমান্নে ০, ম্যাথিউস ২৫*, ডিকওয়েলা ২৬*, বুবমারহ ১/৩২)।
ফল: শ্রীলঙ্কা সাত উইকেট জয়ী
ম্যাচসেরা: লাকমাল (শ্রীলঙ্কা)।
ভারতকে এবার লজ্জায় ডোবালো লঙ্কানরা
Posted Onব্যাট হাতে একাধিক লজ্জার রেকর্ড গড়লো ভারতীয়রা। আর সহজ জয় নিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। গতকাল সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিং করে মাত্র ১১২ রানে গুঁড়িয়ে যায় ভারতের ইনিংস। টানা ১২ ম্যাচ হারের পর জয়ের স্বাদ পেলো লঙ্কানরা। এ বছর ২৭ খেলায় ৫ম জয় এটি তাদের। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১০ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৩ রানে চার উইকেট নেন লঙ্কান পেসার সুরাঙ্গা লাকমাল। জবাবে সাত উইকেট অক্ষত রেখে মাত্র ২০.৪ ওভারে টার্গেট পার করে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। দলীয় ৬৫ রানে উইকেট দেন উপুল থারাঙ্গা। এতে ইনিংসের ১২.৩ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬৫/৩-এ। তবে পরে আর কোনো বিপদ হতে দেননি ম্যাথিউস-ডিকওয়েলা জুটি। এ জুটির অবিচ্ছিন্ন ৪৯ রানে জয় নিশ্চিত হয় শ্রীলঙ্কার। ম্যাথিউস ২৫ ও নিরোশান ডিকওয়েলা অপরাজিত থাকেন ব্যক্তিগত ২৬ রানে। ধর্মশালায় মামুলি টার্গেটে ব্যাট হাতে শুরুতে স্বস্তি ছিল না শ্রীলঙ্কারও। দলীয় ১৯ রানে দ্বিতীয় উইকেট খোয়ায় সফরকারী শ্রীলঙ্কা। ব্যক্তিগত ১ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার গুনাতিলাকা। আর ‘ডাক’ মারেন ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান লাহিরু থিরিমান্নে। পরে ব্যাট হাতে ইনিংস সামাল দেন শ্রীলঙ্কার সাবেক দুই অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তৃতীয় উইকেটে এ দুজন গড়েন ৪৬ রানের জুটি। যদিও জুটিতে দু’জনের চেহারা ছিল ভিন্ন। এই জুটিতে ৪২ রান আসে থারাঙ্গার ব্যাট থেকে। আর জুটিতে ১৭ বল মোকাবিলায় সংযত ব্যাটিংয়ে ম্যাথিউস করেন মাত্র ৪ রান। ভারতীয় পেসার হারদিক পান্ডিয়ার ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপে শিখর ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে থারাঙ্গা করেন ৪৯ রান। ৪৬ বলের ইনিংসে থারাঙ্গা হাঁকান ১০টি চার।