- সুনামগঞ্জ বার্তা - http://sunamganjbarta.com -

মাঝখানে বৈদ্যুতের খুঁটি রেখেই মহাসড়কে ঢালাই

সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার সড়ক দু’পাশে বর্ধিত করা হচ্ছে। নির্মাণ করা হচ্ছে বাসস্টপেজ । সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটগামী যানবাহনের জন্য সড়কের উত্তরপাশে পুকুর ভরাট করে তৈরি করা হচ্ছে বাসস্টপেজ। পূর্ব-পশ্চিমে স্টপেজের দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার ও উত্তর-দক্ষিণে প্রস্থ ৬.১ মিটার। দক্ষিণ পাশে বীরগাঁও সড়কের পশ্চিম দিক থেকে পাগলা সরকারি মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজের মার্কেটের সামন পর্যন্ত সমান দৈর্ঘ্য প্রস্থে বর্ধিত করা হচ্ছে রাস্তা। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১কোটি ২০ লক্ষ টাকা। এতে দীর্ঘদিন পরে হলেও আশা পূরণ হতে যাচ্ছে স্থানীয় এলাকাবাসীর। আশা করা হচ্ছে এবার হয়তো দূর হবে পাগলা বাজারের দীর্ঘদিনের ‘অভিশাপ’ খ্যাত চিরচেনা যানজট।

দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হতে চললেও সমস্যা থেকে যাচ্ছে নতুন নির্মিত রাস্তায়। উত্তরপাশের বাসস্টপেজের পূর্বাংশে (ইমাদ রেস্টুরেন্টের সামনে) বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই কাজ করে যাচ্ছে আবেদ-মনসুর নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কাজ করা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। খুঁটি স্থানান্তর নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এসেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে। শান্তিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মো. নাদির হোসেন বলেন, পাগলা বাজারে রাস্তা বর্ধিত করার জন্য কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। খুঁটি সরানোর জন্য তারা আমাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। আমরা তাদেরকে একটি চিঠি দিয়েছি। তারা চিঠির কোনো জবাব দেননি। খুঁটি সরাতে সওজ কর্তৃপক্ষকে প্রসেস মেন্টেইন করার কথা বলা হয়েছে। প্রায় একমাস আগে আবেদনের ফি জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারা আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন নি। তারা ফি জমা দিলে আমরা আমাদের কাজ করবো।

এদিকে, সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথের (সওজ) উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাগলা বাজারের রাস্তার উত্তরপাশে কাজ চলছে। রাস্তার মধ্যে পিডিবি’র দু’টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ছিলো৷ একটি আমরা তাদর বলে সরিয়েছি। অপরটি সরানো প্রসেস চলছে। পল্লী বিদ্যুতের একটি খুঁটি আমাদের রাস্তার একেবারে মাঝখানে পড়েছে। খুঁটিতে তেমন তাড়ও নেই। খুঁটিটি সরানোর জন্য আমরা বলেছিলাম। একটা খুঁটি স্থানান্তরের জন্য তারা দুই লক্ষ টাকার একটা ইস্টিমেট সাবমিট করেছেন। আমি আমার স্যারকে জানিয়েছি। তিনি জিএম স্যারের সাথে কথা বলবেন। আপাতত খুঁটির আশপাশে ঢালাই না দিয়ে অন্য জায়গা ঢালাইয়ের কাজ চলবে। এটার ব্যপারে পরে দেখা যাবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় পল্লী বিদ্যুতকে বলেছিলাম, প্রসেস মেন্টেইন করতে অনেক লাগবে। এতে আমাদের কাজের সময়ও চলে যেতে পারে। এতো টাকা না ধরে জাস্ট মূল খরচ যা আসে তা দিয়ে দেই। দুইটাই তো সরকারি প্রতিষ্ঠান। তারা বললেন, প্রসেস মেন্টেইন করতে। শুক্রবার বিকাল ২টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাগলা বাজারের উত্তর পাশে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি যে পাশে পড়েছে সে পাশে সিসি ও আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঢালাই করা হয়নি খুঁটির চারপাশে আনুমানিক ৪ ফুট করে জায়গায়। সিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে বাসস্টপেজের পশ্চিমাংশে। উপরে বাঁধাই করা হচ্ছে আরসিসি ঢালাইয়ের রড। পশ্চিমাংশে এখনো রয়ে গেছে পিডিবির আরেকটি বৈদ্যুতিক খুঁটি। যদি এভাবে খুঁটি থেকে যায় তাহলে রাস্তায় যান চলাচল শুরু হলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। স্থানীয়রা দাবি করেন, কাজ চলাকালীন সময় খুঁটিগুলো সরিয়ে নিলে রাস্তার কোনো ক্ষতি হবে না। পরে সরালে নতুন রাস্তায় খুঁড়াখুঁড়ি করতে হবে।

ইমাদ রেস্টুরেন্টের পরিচালক রেজাউল হক রেজা বলেন, খুঁটিটি একদম আমার দোকানের সামনে। নির্মাণাধীন বাসস্টপেজের মাঝখানে। যদি এটি না সরানো হয় যে কোনো সময় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নিশ্চিত বিপদ এড়াতে খুঁটি সরানোর জোর দাবি জানাচ্ছি। পাগলা বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. নূর বলেন, খুবই বিপজ্জনক একটি স্থানে খুঁটি রেখে ঢালাই হয়েছে। দ্রুত রাস্তার মাঝখান থেকে খুটি সরানোর দাবি করছি।

রাস্তার ডিভাইডার নিয়ে প্রশ্ন

সরেজমিন পরিদর্শনকালে একাধিক স্থানীয় লোকজন জানান, উত্তর পাশের পূর্বের পানি নিষ্কাশক ড্রেইনকেই বর্তমান রাস্তার বিভাজক (ডিভাইডার) হিসেবে রেখে দিতে চাইছেন নির্মান কর্তৃপক্ষ। স্টপেজে কাজ করা একজন বয়স্ক শ্রমিকের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) সাথে কথা বলে এ তথ্যের কিছুটা সত্যতাও পাওয়া যায়। স্থানীয়রা বলছেন, যদি আগের ড্রেনকে ডিভাইডার হিসেবে রাখা হয় তাদের খরচ বাঁচবে ঠিক কিন্তু আমাদের বাজারের পরিবেশ নষ্ট আশংকা থেকে যায়। ড্রেইনে ভিতরে ফাঁকা জায়গায় পানি জমা হবে। দু’দিকে রাস্তা বন্ধ থাকায় পানি বেরুতে পারবে না। দীর্ঘদিন পানি একটি জায়গায় বন্ধ থাকলে এডিস মশাসহ নানান জীবাণুর সৃষ্টি হবে। পরিবেশের ব্যপক ক্ষতি হতে পারে। এ নিয়ে কথা হয় সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথের (সওজ) উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, ড্রেনকেই ডিভাইডার হিসেবে ব্যবহার করবো এ ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত আমরা নেই নি। আগে রাস্তার কাজ শেষ হোক। ডিভাইডার পরের বিষয়। আমি সাইটে আসবো। দেখবো। পরে সিদ্ধান্ত নেবো। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ আমরা করবো না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on Facebook [১]Share on Google+ [২]Tweet about this on Twitter [৩]Email this to someone [৪]Share on LinkedIn [৫]