প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে দেশকে একটি শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বুধবার সকালে গণভবনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিতরণ কর্মসূচি রূপালী ব্যাংকের ‘শিওর ক্যাশ’ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সারাদেশে রূপালি ব্যাংকের ‘শিওর ক্যাশ’ মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা বিতরণের এই কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান স্বাগত বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসির চৌধুরী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে মোবাইলে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ট্যাবের সুইচ চেপে এই কার্যক্রম উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের ১ম থেকে ৫ম শ্রেণী এবং ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়ের মোবাইল ফোনে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে যাবে।

‘মায়ের হাসি’ শীর্ষক এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে বছরে ১৬শ’ কোটি টাকা। প্রতি মাসে ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়ের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পৌঁছে যাবে এবং মায়েরা ‘শিওর ক্যাশের’ এজেন্টের মাধ্যমে এই টাকা ক্যাশ করে নিতে পারবেন।

কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মায়েদের যাদের হাতে মোবাইল ফোন নেই, তাদের ২০ লাখ সিম এবং ২০ টাকা ফ্রি টক টাইম দেয়ার চুক্তি করেছে ‘টেলিটক’। কাজেই আমরা তাদের হাতে ও মোবাইল ফোন পৌঁছে দিচ্ছি। অর্থাৎ এখন সবার হাতেই মোবাইল ফোন এবং এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা চলে যাচ্ছে। টাকা তোলার জন্য কোন ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না, দূরে যেতে হচ্ছে না। ঘরে বসেই টাকার খবরটা পেয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, এই টাকার যেন অপব্যবহার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। কাজেই আমি সত্যিই আনন্দিত যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজকে বাস্তব। এর সুফলটা আজ গ্রামের মানুষ পাচ্ছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ পাচ্ছে। কাজেই আমি মনে করি সেটাই সব থেকে বড় অর্জন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি আরেকটা আবেদন করবো অভিভাবকদের প্রতি, নিজেদের ছেলে-মেয়েরা যেনো মন দিয়ে লেখাপড়া করে সেদিকে আপনারা যেমন খেয়াল রাখবেন। তেমনি ছেলে-মেয়ে যেনো বিপথে না যায়, ছেলেবেলা থেকেই সেভাবে তাদের গড়ে তুলবেন। তারা যেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে, দেশকে ভালোবাসতে পারে, মানুষের জন্য তাদের মানসিকতা যেনো এমনভাবে গড়ে ওঠে যে, দেশটা নিজের সেই বোধ যেন গড়ে ওঠে। যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভবিষ্যতে এ দেশ গড়ে ওঠে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়তে পারি।

এসময় প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, রংপুরের পীরগঞ্জ এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুরের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি যুক্ত থেকে মতবিনিময় করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn