সুনামগঞ্জ-১ (জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা-তাহিরপুর-মধ্যনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন রোববার বিকালে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও গাফিলতির বিষয় তুলে ধরেছেন। এসময় এমপি রতন বলেছেন,‘সুনামগঞ্জে এবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ একটি সিন্ডিকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছে। এ কারণে অধিকাংশ হাওরে এখনো বাঁধের কাজই শুরু হয়নি।’

স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সময় মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন,‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে হাওরে স্থায়ী বেড়ী বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে কৃষকের সোনার ফসল ঘরে তুলতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়ী বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবারও হাওর রক্ষা বাঁধের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। এই বেড়ী বাঁধের কাজ সময় মত না হলে কৃষকরা সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারবে না।’
সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, ‘এবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিকাংশ বেড়ী বাঁধের কাজ একটি লুটেরা সি-িকেট ভাগাভাগি করে নিয়ে গেছে। আমার এলাকার হাওরগুলো এখনও পর্যন্ত হুমকির সম্মুখিন। অধিকাংশ হাওরে এখনও বাঁধের কাজই শুরু হয়নি। আমি হাওরে ছিলাম, প্রতিটি হাওরে আমি গিয়েছি, প্রতিটি হাওর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ইতিমধ্যে আমার এলাকার একটি বড় হাওর ‘চন্দ্র সোনার থাল’ মেঘালয় থেকে আসা ঢলে তলিয়ে গেছে।’
পানি সম্পদমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘হাওরের ফসলকে রক্ষা করতে হবে,
হাওরবাসীকে বাঁচাতে হবে। দ্রুত বেড়ীবাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে।’
এমপি রতন বলেন, ‘আমি হাওরের সন্তান। হাওরের মানুষের কান্না কত বেদনাদায়ক আমি বুঝি। যারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সমস্ত কাজ হাতিয়ে নিয়েছে, তারা হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের একটি অংশ। এরা জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। আমি হাওরের কাজের অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়েছি কাজ সম্পন্ন করার জন্য। কিন্তু কোন রকমের সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ যারা ঠিকাদার, তাদের নাকি অনেক শক্তি। তাদের হাত অনেক লম্বা। এই স্বাধীনতা বিরোধী চক্র জামাত শিবিরের সন্ত্রাসীদের পুষ্ঠপোষকরা আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে গত ২ মার্চ আমার সুনামগঞ্জ শহরের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে আমি বাসায় না থাকায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার বাসায় যারা হামলা করেছে এরা কারা? এই স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ও জামাত শিবিরের ক্যাডাররা যারা আজ বিভিন্ন লেবাস লাগিয়ে ঘুরছে, কালো টাকার মালিক এরা, আমাকে মেরে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমার অপরাধ আমি উন্নয়নমূলক কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাই পুলিশ প্রশাসনকে যারা ৫ জন সন্ত্রাসীকে ধরতে সমর্থ হয়েছেন। আমি ধন্যবাদ জানাই সুনামগঞ্জ জেলাবাসী ও আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণকে যারা এই নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’  তিনি বলেন, ‘আজ মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে আমার উপর সন্ত্রাসী হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn