আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: মুসলিম পুরুষকে হিন্দু নারীর বিয়ে ‘অবৈধ’ হলেও তাদের সন্তান বৈধ বলে রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামান্না এবং বিচারপতি এম এম শান্তনা গৌরদারের বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। দেশটির শীর্ষ এই আদালত বলেছে, এ ধরনের বিয়েতে জন্ম নেয়া সন্তান পিতার সম্পত্তির প্রকৃত উত্তরাধিকারী, তাকে বঞ্চিত করার অধিকার কারও নেই। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মোহাম্মদ ইলিয়াস ও হিন্দু নারী ভল্লিআম্মাকে বিয়ে করেছেন। এই দম্পতির ছেলে তার বাবার সম্পত্তির অধিকারী হবেন কি-না তা জানতে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল দেশটির সুপ্রিম কোর্টে। আদালত বলছে, তিনি বৈধ সন্তান, অতএব বাবার সম্পত্তির ন্যায়সঙ্গত উত্তরাধিকারী। সেই রায় বহাল রেখে শীর্ষ আদালত বলেছে, যদি কোনো নারী মূর্তি পূজা ও অগ্নি পূজা করেন, তাহলে মুসলমান পুরুষের সঙ্গে তার বিয়ে বৈধ নয়, তার কোনও বৈধতা নেই। এই সম্পর্ক পুরোপুরি অবৈধ। কিন্তু এই বিয়ে থেকে জাত সন্তানের বাবার সম্পত্তিতে পূর্ণ অধিকার রয়েছে। মোহাম্মদ ইলিয়াস ও ভল্লিআম্মার ছেলে সামসুদ্দিন তার বাবার মৃত্যুর পর পারিবারিক সম্পত্তির অধিকার পাবেন। কিন্তু ইলিয়াসের আত্মীয়রা দাবি করেন, হিন্দু নারীর সঙ্গে ‘অবৈধ’ বিয়ের ফলে তার জন্ম, তাই তিনি ‘অবৈধ সন্তান’।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিয়ের সময় ভাল্লিয়াম্মা হিন্দু ছিলেন বলে ইলিয়াসের সঙ্গে তার বিয়ে ধর্মমতে সিদ্ধ নয়, আবার আইনের চোখে বেআইনিও নয়। এটা শুধুমাত্র ‘অসিদ্ধ’ বিয়ে। সে ক্ষেত্রে বিধবা ভাল্লিয়াম্মা ইসলামি আইনে সম্পত্তির উত্তরাধিকার পাবেন না। কিন্তু নিজের ভরণপোষণের অর্থ পাবেন। তবে তার সন্তানকে কোনো রকম বৈষম্যের মধ্যে ফেলা যাবে না। বৈধ সন্তানের যা কিছু অধিকার প্রাপ্য, ভাল্লিয়াম্মার সন্তান শামসুদ্দিনও তাই পাবেন। শামসুদ্দিনই পিতার সম্পত্তির অধিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তার চাচাতো ভাইদের দাবি ছিল, তিনি সম্পত্তির দাবিদার নন। কেরালা হাইকোর্ট রায়ে শামসুদ্দিনের অধিকারকেই স্বীকৃতি দিয়েছিল। শীর্ষ আদালত সেই রায়ই বজায় রাখল। সূত্র : এবিপি আনন্দ, আনন্দবাজার।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn