যাদের বয়স ১৩ বছরের কম, তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট না রাখার পক্ষে ফেসবুক। তাই কারও বয়স নিয়ে সন্দেহ হলে তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেবে ফেসবুক। ডিজিটাল ট্রেন্ডসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইনস্টাগ্রাম ও এর মালিক প্রতিষ্ঠান ফেসবুক কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগের নীতিমালায় পরিচালনাগত পরিবর্তনের অংশ হিসেবে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে কম বয়সীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ফেসবুক কেবল কম বয়সী ব্যবহারকারী সম্পর্কে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিত। এখন কম বয়সী কেউ বয়সের প্রমাণ দিতে না পারলে সবার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো অ্যাকাউন্টে সন্দেহ হলে যাঁদের বয়স ১৩ বছরের বেশি, তাদের ক্ষেত্রে প্রমাণ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার-প্রদত্ত পরিচয়পত্র দেখিয়ে বয়স প্রমাণ করতে পারলে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হবে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ফেসবুক এখন বয়স্কদের জায়গা। ফেসবুক থেকে তরুণেরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু ইনস্টাগ্রামে এখনো চিত্রটা এ রকম নয়। এখনকার তরুণেরা ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগ্রহী বেশি। ইনস্টাগ্রামের তাই তরুণদের সংখ্যাটা বাড়ছে। তাই কম বয়সী ব্যবহারকারীদের ধরা শুরু হলে ইনস্টাগ্রামের মতো সাইটে তার প্রভাব পড়বে। এতে ব্যবহারকারী কমবে এবং ফেসবুক কর্তৃপক্ষের আয়ের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোর ও ফায়ারক্রেস্ট ফিল্মসের করা এক ডকুমেন্টারি প্রচারের পর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের নীতিমালা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। ওই চ্যানেলের এক সাংবাদিক ছদ্মবেশে আয়ারল্যান্ডে ফেসবুকের কনটেন্ট পর্যালোচনাকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি বলেন, কাজের সময় কম বয়সী ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পেলে তা এড়িয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ডানপন্থী রাজনৈতিক পেজগুলো মুছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন অবস্থান নেয় ফেসবুক। ওই অভিযোগের বিরুদ্ধে এক ব্লগ পোস্টে ফেসবুক বলেছে, হাইপ্রোফাইল কারও পেজ বা রাজনৈতিক দলের কোনো পেজ মুছে ফেলার আগে ফেসবুকের কর্মী আরেক স্তরের পর্যালোচনা করেন। পর্যালোচনাকারীদের জন্য তারা নীতিমালা হালনাগাদ করছে। কম বয়সীদের অ্যাকাউন্ট পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের চাইল্ড অনলাইন প্রাইভেসি প্রোটেকশন আইন অনুযায়ী, ডিজিটাল কোম্পানি হিসেবে ১৩ বছরের কম বয়সী কারও তথ্য সংগ্রহ করতে অভিভাবকের অনুমতি লাগবে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পর ফেসবুকের ওপর এখন অনেক চাপ। ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে নজরদারির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রভাব ফেলা, ভুয়া খবর ঠেকাতে ব্যর্থতার মতো নানা অভিযোগে ফেসবুকের সমালোচনা হচ্ছে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চ বলছে, নতুন মডারেশন নীতিমালা তৈরি করেছে ফেসবুক। শিগগিরই নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন করবে প্রতিষ্ঠানটি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn