অভিবাসন ও বহু সংস্কৃতির প্রতি যুক্তরাজ্যের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অতীতের চেয়ে উদার হয়েছে। তবে ইসলাম ধর্ম নিয়ে দেশটির মানুষের উদ্বেগের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যুক্তরাজ্যের ৫২ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মকে নিজেদের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার প্রতি হুমকি মনে করে।গতকাল বুধবার প্রকাশিত ‘ফিয়ার অ্যান্ড হোপ-২০১৭’ শীর্ষক এক জরিপ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক অপরাধ বন্ধে কাজ করা দাতব্য সংগঠন ‘হোপ নট হেইট’ ধর্ম, বর্ণ, অভিবাসন, রাজনীতি ও সামাজিক বৈষম্য বিষয়ে যুক্তরাজ্যের মানুষের মনোভাব জানতে ২০১১ সাল থেকে এমন জরিপ পরিচালনা করছে। দেশের চার হাজার মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে মোট ১৪০টি প্রশ্ন করা হয় এ জরিপে। জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশ নিজেদের ‘ব্রিটিশ’ বলে পরিচয় দিয়েছে। আর ৩৬ শতাংশ বলেছে তারা ‘ইংলিশ’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫২ শতাংশ মনে করে যে ইসলাম পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করেছে। তাদের মধ্যে আবার ৪২ শতাংশ বলেছে, ম্যানচেস্টার, ওয়েস্ট মিনিস্টার ও লন্ডন ব্রিজের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা মুসলমানদের সম্পর্কে অতীতের চেয়ে বেশি সন্দিহান করে তুলেছে তাদের। আর ২৫ শতাংশ ব্রিটিশের ধারণা, ইসলাম সহিংসতাকে উসকে দেয়। ব্রিটিশ জীবনধারা থেকে ইসলামকে মৌলিকভাবে ভিন্ন মনে করে ৩৯ শতাংশ উত্তরদাতা। তবে ৭৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছে, তারা কোনো ব্যক্তির অপকর্মের জন্য সমগ্র সম্প্রদায়কে দায়ী করার পক্ষপাতী নয়। আর ৮০ শতাংশ বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী হামলার পর মুসলমানরা যেভাবে পুরো জাতির সঙ্গে ঐক্য দেখিয়েছেন, সেটিকে তারা ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।

ইসলামবিদ্বেষী অপরাধ বন্ধে কাজ করা সংগঠন ‘টেল মামা’র পরিচালক ইমান আতা হাফিংটন পোস্টকে বলেন, জরিপে ইসলামবিরোধী যে মনোভাব উঠে এসেছে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সমাজের একটি বড় অংশের কাছে ইসলাম সম্পর্কে মারাত্মক নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। পরিস্থিতি বদলাতে মুসলিম সম্প্রদায় ও মসজিদগুলোকে আরও উদার হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব ইসলামি কট্টরপন্থীদেরই উৎসাহিত করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৫ শতাংশ মানুষ মনে করে, অভিবাসন যুক্তরাজ্যের জন্য ভালো ফল দিয়েছে, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। আর ৮৮ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করে, অভিবাসন অতি জরুরি। তবে তারা চায়, অর্থনৈতিক প্রয়োজন অনুযায়ী অভিবাসননীতি নির্ধারিত হোক।এ ছাড়া মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ মনে করে, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে প্রত্যাশিত চুক্তি সম্পাদন করে ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) কার্যকর করতে পারবেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn