বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম – ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি অবসরের পর প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার এ সফরে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। বহু বছর থেকেই আমি তার পারিবারিক বন্ধু। তিনি আমার এক পরম হিতৈষী। লৌকিকতার বেড়াজাল ভেঙে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমরা খুবই বাস্তবের কাছাকাছি। তাকে ক্ষমতাবান দেখেছি, দেখেছি কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত রাজনৈতিক ঘূর্ণিপাকে কষ্টকর সময় পাড়ি দেওয়া একজন রাজনীতিক হিসেবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে যেমন দেখেছি, তেমন এস-৩০ গ্রেটার কৈলাসে নিজস্ব ছোট্ট বাড়িতে দেখেছি। তার ছেলেমেয়ে অভিজিৎ, ইন্দ্রজিৎ ও শর্মিষ্ঠা মুখার্জি তিনজনকেই বেশ শিশুকালে দেখেছি। শর্মিষ্ঠা মুখার্জিকে কোলে নিয়েছি কিনা খেয়াল নেই। কিন্তু কয়েক বছর তাকে গল্প শুনিয়েছি। ইন্দ্রজিৎ মুখার্জি পিন্টু ভীষণ দুষ্টু ও খুবই ছোট ছিল। জোর করেই কোলে বসে থাকত। বাচ্চাদের কোলের সঙ্গে কাঁধে-পিঠে চড়ার একটা সম্পর্ক থাকে। কতবার কাঁধে চড়েছে, পিঠে চড়েছে হিসাব করতে গেলে ভালো অঙ্ক শিখতে হবে। কোনো ঠুনকো কাচের মতো আমাদের সম্পর্ক নয়। সম্পর্কটা অনেক শক্ত। শুভ্রা মুখার্জি বেঁচে থাকতে তা ছিল আরও শক্ত। ধর্মীয় ভিন্নতা ছাড়া আমি অমন মায়ের মতো মহিলা খুব একটা দেখিনি। তালকাটরা রোডের বাড়ি সে ৭ নম্বরই হোক আর ১৩ নম্বরই হোক, ২ নম্বর জন্তর-মন্তর আবার তালকাটরা, সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন— কোথাও তার গায়ে গরম লাগার কোনো লক্ষণ পাইনি। রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রথম যেদিন গিয়েছিলাম প্রণবদার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনবার খবর পাঠিয়েছিলেন, ‘বাঘা যেন আমাকে না দেখে না যায়।’ তখন তিনি খুবই অসুস্থ। ভালো করে বিছানায় উঠে বসতেও পারতেন না। সে অবস্থায়ও আমি যখন তার বিছানার পাশে বসে ছিলাম তখন তিনি চেয়ারে না বসে তার পাশে বিছানায় বসতে বলেছিলেন। বার বার আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, ‘ভগবানের ওপর ভরসা রেখো, তোমার আল্লাহ যা নির্ধারণ করেছেন কেউ তোমাকে তা থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। বাংলাদেশে আমরা বঙ্গবন্ধু আর তোমাকেই আপন জানি। নেতা, মহানেতা, মন্ত্রী সে তো আজ আছে কাল নেই। কিন্তু সারা দুনিয়ার নিপীড়িত মানুষের হৃদয়ে তোমার যে সংগ্রামী ছবি আঁকা আছে তা কেউ মুছতে পারবে না। দেখো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আজ কত বছর, এই দিল্লিতে একজন জীবিত বীর বাঙালির নামও যদি কেউ মনে করে সে হচ্ছো তুমি। নেতাজি সুভাষের পর পশ্চিমবঙ্গে তোমার নাম সবার আগে উচ্চারিত হয়। তোমার থেকে অনেক বড় বড় বাঙালি এই পৃথিবীতে আছে। কিন্তু তোমার মতো সংগ্রামী বাঙালি, তোমার মতো ভালোবাসার বাঙালি দ্বিতীয় কেউ নেই।’

কথাগুলো যখন ভাবী তখন শিহরিত হই। একজন মানুষ কত উদার ও দরদি হলে ওভাবে বলতে পারেন। তাই তাকে হারিয়ে বড় অভাববোধ করি। জানি, কেউ চিরদিনের জন্য নয়, কিন্তু তবু যারা ভালোবাসেন, স্নেহ করেন তাদের অভাব বড় বেশি করে হৃদয়ে বাজে। মুখার্জি পরিবারের সঙ্গে পরিচয় সেও প্রায় ৪০ বছর। তাদের ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন দেখিনি। মানুষ হিসেবে একই রকম আচরণ করেছেন। পুরো পরিবারের সঙ্গে এ রকম ঘনিষ্ঠতা সবার হয় না। আমিও তো দেখি, আমি যাদের স্নেহ করি আমার ছেলেমেয়েরা হয়তো তাদের পছন্দ করে না। একজন করলে আরেকজন করে না। কিন্তু প্রণবদার বাড়িতে তা দেখিনি। প্রণবদা রাষ্ট্রপতি হওয়ার দু-তিন বছর আগের কথা। আমি কেবল গেছি হীরালাল এসে দাদার কাছে নিয়ে যাচ্ছিল। হীরালাল প্রণবদার বহু বছরের কর্মী। বাড়িতে দেখা-সাক্ষাতের দায়িত্ব তার। কী এক অসুখে একসময় কুঁজো হয়ে গিয়েছিল। পরে ধীরে ধীরে অনেকটাই সোজা হয়েছে। বড় ভালো মানুষ সে। দাদা তখন তার অফিসে কাজ করছিলেন। দিদিকে যারা দেখাশোনা করেন তাদের মধ্যে রাধা বা লক্ষ্মী কেউ একজন ছুটে গিয়ে দিদিকে বলেছিল, ‘বিবিজি, আপকা রাজা ভাই হ্যায় না? ও আয়া।’ আমি দিদির ড্রইংরুমে গিয়ে বসতেই ছুটে এসে বলছিলেন, ‘বাঘা তুমি জানো, ওরা তোমাকে কী বলে? ওরা মনে করে তুমি কোনো রাজা।’ এ রকম অনেক ঘটনা অনেক সময় ঘটত। প্রণবদা তখন রাষ্ট্রপতি। গিয়েছিলাম প্রদ্যুৎ গুহের ছেলের বিয়েতে। রাষ্ট্রপতি ভবনের এক মাঠে আয়োজন করা হয়েছিল। আমাদের এক পরম হিতৈষী তপন চক্রবর্তীর সঙ্গে সেখানে দেখা হয়েছিল। দুর্দিনে ভদ্রলোক আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেককে থাকতে দিয়েছেন, খেতে দিয়েছেন। এক অভাবনীয় লোক ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে যখন প্রণবদা এলেন, আমি যেতে যেতেই পাশে বসিয়েছিলেন। আমি, তার ছেলে অভিজিতের মেয়ে এই তিনজন। কয়েক মিনিট পর উঠে আসতে চেয়েছিলাম। ১৫-২০ মিনিট উঠতে দেননি। তাই বসে ছিলাম। যখন যেখানে দেখা হয়েছে সেখানেই এক আলাদা গুরুত্ব দিয়েছেন।

এই তো সেদিন ১৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে প্রথম বিদেশ সফরে ঢাকা এসেছিলেন। আমি ১২ জানুয়ারি রাতে ফোন করে আমার বাড়িতে আসতে পারবেন কিনা জিজ্ঞাসা করেছিলাম। বলেছিলেন, ‘এ যাত্রায় আর হবে না। সবাইকে নিয়ে তুমি এসো।’ ১৫ তারিখ সকালে সোনারগাঁওয়ে ফোন করেছিলাম। দু-তিন বার ফোন করে দাদাকে পাইনি। কারণ তার রুমে ফোন দেওয়া বারণ ছিল। মেয়ে মুন্নী এসেছিল। তাকেও পাইনি। বহু বছর দাদার কাজ করে পদম। শেষে তাকে ফোন করেছিলাম। পদম ছিল না, ওর বউ ছিল। সে বলেছিল, আমি জানাচ্ছি। প্রণবদার তখন ধানমন্ডিতে যাওয়ার কথা ছিল। তারপর গণভবনে, তারপর খুব সম্ভবত অর্থমন্ত্রীর নৈশভোজ, তারপর হোটেলে ফেরা। আমার ধারণা ছিল তার পরদিন অথবা ১৭ তারিখ দেখা হবে। কিন্তু ৭টার দিকে অ্যাম্বাসি থেকে ফোন পেলাম, সোয়া ৯টায় সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এত জ্যাম বলার মতো না। পরে পিছিয়ে এসে সংসদ ভবনের ভিতর দিয়ে খামারবাড়ি হয়ে সোনারগাঁওয়ে গিয়েছিলাম। ৫-৬ মিনিট দেরি হয়েছিল। দেরি হয়ে ভালোই হয়েছিল। আমি যখন করিডর দিয়ে যাই তখন হাসানুল হক ইনু বেরিয়ে আসছিলেন। ঠিক সময়ে গেলে হয়তো ৪-৫ মিনিট বসে থাকতে হতো। তা হয়নি। প্রায় ৪০ মিনিটের মতো ছিলাম। আরও থাকলেও হয়তো আপত্তি ছিল না। কত কথা আর বলা যায়। একসময় চলে এসেছিলাম। দিদি মারা যাওয়ার পর দাদাকে দেখাশোনার কিছুটা হলেও অভাব বা ব্যত্যয় ঘটেছে। একজন মানুষ বিছানায় পড়ে থাকলেও যে বাড়ির কাজ দেখাশোনা করতে পারেন, শুভ্রা মুখার্জি তার উজ্জ্বল প্রমাণ। তিনি অনেক দিনই তেমন কাজকর্ম করতে পারতেন না। কিন্তু যারা বাড়িতে ছিল বা থাকত তারা ত্রুটিমুক্ত কাজ করত। কোনো কাজের ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যেত না। এখন তিনি নেই, ত্রুটি আছে কিনা বলতে পারব না। কিন্তু দাদার দেখাশোনার কিছুটা যে অযত্ন হয় না, তা বলতে পারব না। ব্যক্তিগতভাবে যে পর‌্যায়ে আমাদের সম্পর্ক সেখানে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। আমরা উভয় পরিবারই খুবই খোলামেলা। সেদিন আমার স্ত্রী, ছেলেমেয়েরা মুন্নীর সঙ্গে যে কথাবার্তা বলেছে তাও ছিল খোলামেলা। আমার স্ত্রীর দেওয়া শাড়ি ওর যে খুবই পছন্দ হয়েছে তা বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। গত ২০ বছরে যখনই গেছি তখনই প্রণবদাকে গামছা উপহার দিয়েছি। এবারও দিয়েছিলাম। আমাদের কথাবার্তার সমস্ত সময়ই তিনি গামছা গলায় নিয়েই ছিলেন এবং কয়েকবার চোখে-মুখে গামছা লাগানো দেখে অভিভূত হয়েছি।

পত্রপত্রিকায় এসেছে নির্বাচনের আগে আগে তার এই সফর আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেত্রীর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে বোঝাপড়া। আমার সঙ্গেও তো বেশ অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। আমার কিন্তু তেমনটা মনে হয়নি। পত্রপত্রিকা ও ফেসবুকে নানা ধরনের মন্তব্য দেখেছি। সত্যিই আমরা অনেক সময় কাউকে নিঃস্বার্থ সম্মান দিতে পারি না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে প্রণব মুখার্জি সম্পর্কে যতটা বলা হয়, অতটা তিনি করেননি। ভোটার ছাড়া অমন নির্বাচন অন্ততপক্ষে প্রণব মুখার্জি যে চাননি, তা আমি জোর গলায় বলতে পারি। অন্যরা সবাই চেয়েছিলেন আমার কাছে তেমনও মনে হয় না। কারণ শিবশঙ্কর মেননকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানতাম। তিনি অসম্ভব ধরনের মেধাবী ছিলেন। হ্যাঁ, সুজাতা সিংসহ আরও কয়েকজন ছিলেন, যারা যেনতেনভাবে ভারতীয় স্বার্থে নির্বাচনী কার্যকলাপ এগিয়ে নিয়েছেন। সে যাই বলুক, ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রহসন গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে শত বছর পিছিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে পাহাড়প্রমাণ বদনামের ভাগিদার হয়েছেন ভারতীয় নেতৃবৃন্দ। পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের নির্বাচনকে কেউ কখনো স্বীকার করেনি, করবেও না। আমাদের দেশে দুর্বল বিরোধী দলের কারণে পাতানো নির্বাচনের বিষফোঁড়া থেকেই গেল। সেটা ফেটে এখনো বিষবাষ্প বেরিয়ে যেতে পারছে না। যে বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন, সেই বঙ্গবন্ধুর দলের এ রকম একটি নিন্দনীয় পদক্ষেপ সবার মাথা হেঁট করে দিয়েছে। নিশ্চয়ই নির্বাচন নিয়ে ভারত তার কথাবার্তা বলছে বা বলবে। কিন্তু তা প্রণব মুখার্জির মাধ্যমে নয়। মনে রাখতে হবে, বিজেপি সরকারে প্রণব মুখার্জি মোটেই কিছু নন। প্রণব মুখার্জি নিঃসন্দেহে ভারতের একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা। তাকে নিশ্চয়ই বিজেপিও সম্মান করে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশনের সাধারণ একজন থিঙ্কার যা ভাবেন, প্রণবদা অন্তত বিজেপির কাছে তার চেয়ে বেশি নন।

ভারতের একমাত্র বাঙালি সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির এই সফর অসাধারণ সুন্দর সৌহার্দ্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বলা যেত, শুধু ভারতীয় হাইকমিশনে তার সঙ্গে দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ওইসব ছবি না তুললে অনেক ভালো হতো। সাবেক রাষ্ট্রপতিকে যেভাবে জানি, চিনি তার মধ্যে কোনো অহংকার নেই, উচ্চনাসিকা নেই। তিনি সবসময় একই রকম জীবনযাপন করেছেন। আমি কখনো তাকে উত্তেজিত দেখিনি। তার সংসারে যে জোয়ার-ভাটা যায়নি, তা কিন্তু নয়। তার পরও একজন অত্যন্ত সংযত মানুষ হিসেবে তাকে সবসময় পেয়েছি। ছবির কথা, সারা জীবনে তার সঙ্গে আমার ছেলেমেয়ে, ভাইবোন কত ছবি তুলেছি তার কোনো হিসাব নেই। কিন্তু কখনো এমন হয়নি যে, আমি সামনে বসি তোমরা পেছনে দাঁড়াও। শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী যেভাবে পাশে বসে ছবি তুলেছেন অতটা কাছাকাছি মা-ছেলে একত্রে বসে। তাহলে এখানে হাইকমিশনে অমন হলো কেন? শুধু একা প্রণব মুখার্জি চেয়ারে বসলেন আর সবাই পেছনে দাঁড়িয়ে, প্রণবদার মতো একজন সাবেক রাষ্ট্রপতিও দাঁড়িয়ে ছিলেন। এটা কী করে হলো? চাণক্যের দেশ ভারত। তাদের কূটনৈতিকরা এটুকুও কী বোঝেন না, ও রকমভাবে ফটোসেশন করায় মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হবে। ওভাবে ছবি তুলতে প্রণব মুখার্জি কখনো উৎসাহী ছিলেন এটা গলায় গামছা নিয়ে বললেও (নামাবলি প্রণাম) আমি মেনে নেব না। কারণ এক দিনে কারও চরিত্র বা অভ্যাস বদল হয় না। প্রণব মুখার্জি ও ধরনের মানুষই নন। তাই যে-ই করে থাকুক পরিকল্পনাটি কাঁচা হাতের খুবই কম বুদ্ধির। অমন ছবি দুই দেশের সম্পর্কের জন্য অসম্ভব ধরনের ক্ষতিকর। ওতে কী বোঝা যায়? বোঝা যায় বড় ভাই, ছোট ভাই অথবা মুরব্বিপনা। আমি তো এক দিনও তাদের বড় ভাই সাজা বা মুরব্বিপনার আভাস পেলাম না। কতবার কতজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে, কথাবার্তা হয়েছে। আমরা যেমন সুসম্পর্ক চাই, তারাও তেমন চান। খুব বেশি যে মাতব্বর হতে চান, তা তো কখনো মনে হয়নি। যা সত্য আমি সবসময় তাই বলার চেষ্টা করেছি। যতক্ষণ বেঁচে থাকব ততক্ষণ তাই বলব। এতে লাভ-ক্ষতি যা হওয়ার হবে। দেশের ক্ষতি না হলেই হলো। বেশ কয়েক বছর আগে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়েছিলেন। ছয়জন রাঁধুনি সঙ্গে নিয়েছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তখন রাষ্ট্রপতি ভবনে। তিনি তাকে একবার রেঁধে খাইয়েছিলেন। আমি খুব মর্মাহত ও অসম্মানবোধ করেছিলাম। দিল্লিতে গিয়ে তাকে রেঁধে খাওয়ানো ঠিক হয়নি। কিন্তু সেদিন যে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন এখানে ৫০বার তাকে রেঁধে খাওয়ালেও সেটা সম্মানের হতো, বাঙালি জাতির গৌরবের নিদর্শন হতো। যখন যেখানে যেটা মানায় সেটাই করা উচিত। সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আমাদের দেশের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতিসহ অন্যান্য প্রবীণ নেতাকে ওভাবে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা জাতীয় অবমাননার শামিল। এই ক্ষয় কত দিনে ঘুচবে বা মিটবে তা স্রষ্টাই জানেন, আমরা কেউ জানি না।

লেখক: রাজনীতিক

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn