এমপি হারুনের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ
বার্তা ডেস্ক :: আগামী ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচন। আসন্ন এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে এটি প্রায় নিশ্চিত। আর এ জন্য বেশ জোরেসরেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদ। এবার পৌরসভার চেয়ারও দখলে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জটিল হচ্ছে ভোটের রাজনীতি। এরই মধ্যে এমপি হারুন অর রশীদ পৌরসভায় দলীয় মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে শুরু করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, দলের শীর্ষ নেতাদের না জানিয়েই পছন্দের প্রার্থীদের চূড়ান্ত করছেন তিনি। বিষয়টি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানেন না। এমপি হওয়ায় ইচ্ছেমত দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিচ্ছেন তিনি। এটি তার ক্ষমতার অপব্যবহার। তার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেছে জেলা বিএনপির একাংশ। এরই মধ্যে এমপি হারুন অর রশীদ পৌরসভার ১৫ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন বলে জানা গেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম টিপু জানান, পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার এখতিয়ার এমপি হারুনের নেই। এই দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে জেলা বিএনপির। তিনি যা করছেন, তা সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ও অবৈধ। তিনি আরও বলেন, শুনেছি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মেয়র প্রার্থী তিনজনের কাছে ২৫ হাজার করে এবং কাউন্সিলর পদে প্রায় ৩০ প্রার্থীর কাছে ৫ হাজার করে টাকা নিয়ে ফরম দিয়েছেন এমপি হারুন। এমনকি কাউন্সিলর হিসেবে দলীয় মনোনয়নও দেয়া হয়েছে গত শনিবার। তফসিল ঘোষণার আগে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে এবং কোনো আলোচনা ছাড়াই দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা সম্পূর্ণ একক সিদ্ধান্ত। বিষয়টি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়ে রফিকুল ইসলাম টিপু বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। জেলা বিএনপির পক্ষ হতে পুনরায় দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জেলা বিএনপির অপর এক নেতা বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ফরম দিচ্ছেন ও দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছেন এমপি হারুন। এক্ষেত্রে এমপি তার পছন্দের প্রার্থীকেই চূড়ান্ত করছেন। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা, তাই এসব কার্যক্রমে জেলা কমিটির কোনো মতামত বা পরামর্শ নেয়ারও প্রয়োজন মনে করছেন না। এমপি হারুনের কাছ থেকে দলীয় মনোনয়ন নিতে মেয়র পদে ২৫ হাজার টাকা ও কাউন্সিলর পদে ৫ হাজার করে ফরমের অফেরতযোগ্য মূল্য নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আসন্ন পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি শাহনেওয়াজ খান সিনা। তিনি জানান, পৌর বিএনপি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ফরমের অফেরতযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়। গত মঙ্গলবার কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন নেয়ার আবেদনের শেষ সময় ছিল এবং শনিবার সবগুলো ওয়ার্ডে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদ। শাহনেওয়াজ খান সিনা বলেন, এ পর্যন্ত মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন নিতে ৩ প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন। অন্য দুইজন হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দীন ও সাবেক ছাত্রনেতা মো. আনোয়ার হোসেন। মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্তের সিদ্ধান্ত আরও সপ্তাহ দুয়েক পরে আসতে পারে বলে জানান তিনি। রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে এক ব্যক্তি বলেন, এমপি ব্যস্ত আছেন, পরে ফোন করবেন। পরে সোমবার (৫ অক্টোবর) কয়েকবার ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। ফলে এ নিয়ে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।- জাগো নিউজ২৪