করোনার জন্য নারী ক্ষমতায়নে অর্জিত সাফল্য ব্যর্থ হতে দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
প্রথমত, শেখ হাসিনা বলেন যে যার সম্ভাবনা উপলব্ধি করা হয়েছে, এমন প্রতিটি মেয়ের কাছ থেকে, যার প্রতিভা কাজে লাগানো হয়েছে এমন প্রতিটি নারীর কাছ থেকেই বিশ্ব উপকৃত হতে পারে এবং এটি কেবল শিক্ষার মাধ্যমেই করা যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আয় ও কর্মসংস্থান থেকে ক্ষমতায়ন আসে। সুতরাং, আয়-উৎসাহমূলক কার্যক্রমে নারীদের সম্পৃক্ত করা একটি অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
তৃতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী বলেন যে কোভিড-১৯ মহামারির এ সময়ে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন এবং অন্যান্য বড় কর্মসংস্থান খাতগুলোতে অভিবাসী শ্রমিকসহ নারী শ্রমিকদের চাকরি অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে যাতে তাঁরা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল না হয়ে পড়েন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৫ সালের ‘বেইজিং ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন’ লিঙ্গ সমতা এবং নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি সাহসী রোডম্যাপ তৈরি করেছিল। এটি গভীরভাবে নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে এবং এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক উন্নয়ন তরান্বিত করেছে। এরপর প্রায় সব দেশই নারী ও মেয়েদের উন্নয়ন এবং সুরক্ষার জন্য আইনি কাঠামো তৈরি করে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের উন্নয়নের এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে নারীদের রেখেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে দেশে পুরুষ এবং নারীদের জন্য সমঅধিকারের নিশ্চয়তা দিয়ে দেশে একটি প্রগতিশীল সংবিধান তৈরি হয়। ‘আমরা নারী শিক্ষাকে একটি অগ্রাধিকার এবং নারীদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে একটি প্রয়োজনীয়তায় পরিণত করেছি। আমরা নারীদের উন্নয়নের সক্রিয় প্রতিনিধি হিসেবে দেখি,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ২০১১ সালে বাংলাদেশ প্রগতিশীল একটি নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন পঞ্চাশে উন্নীত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে সংসদ সদস্য, উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেতা এবং সংসদ স্পিকার হলেন নারী। স্থানীয় সরকারে নারীদের জন্য ত্রিশ শতাংশ আসন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। জনসেবা খাতে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়াতেও বিশেষ বিধান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীরা এখন উচ্চ আদালতের বিচারক, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন। এ ছাড়া বর্তমানে প্রায় দুই কোটি নারী কৃষি, শিল্প এবং পরিষেবা খাতে নিযুক্ত রয়েছেন এবং ৩৫ লাখের বেশি নারী দেশের বৃহত্তম রপ্তানি-আয়ের খাত তৈরি পোশাক খাতে কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার নারী সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমাদের নারীরা বাধা অতিক্রম করছেন এবং ক্যারিয়ারে সফল হচ্ছেন, যা আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম কখনোই ভাবতে পারেনি,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনেক বৈশ্বিক প্রশংসা অর্জন করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।