করোনায় এক মাসে চাকরি হারিয়েছেন সাড়ে ১১ কোটি ভারতীয়!
করোনা সংকটে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি।বিশেষ করে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত। এর প্রভাব পড়েছে দেশটির চাকরির বাজারেও। সম্প্রতি মোদি সরকার আর্জি জানিয়েছিল,’কাউকে চাকরি থেকে তাড়াবেন না।’ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আরও বাড়ছে বেকারত্বের হার। ভারতে মোট ১১ কোটি ৪০ চাকরি লকডাউনের বাজারে অবলুপ্ত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই) সিএমআইই জানায়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ছোটো ব্যবসায়ী ও দিনমজুররা। মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, ৩ মে-র সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ২৭.১ শতাংশ, যেটা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। ভারতে শিল্পোত্পাদন কমেছে ১৬.৭ শতাংশ। ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে উত্পাদন কমেছে ২০.৬ শতাংশ, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে ৬.৮ শতাংশ। ২৬ এপ্রিলের সপ্তাহে বেকারত্ব ছিল ২১.১ শতাংশ, তার আগের সপ্তাহে ২৬.২ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, করোনার জেরে ভারতে ২৫ মার্চ থেকে চলছে লকডাউন। ধাপে ধাপে তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১৮ মে থেকে যে চতুর্থ লকডাউন হবে, তা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কেন্দ্র সরকার দেশ লকডাউনের পর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, দিল্লি, গুজরাট, ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র (পুনে), ওড়িশা, রাজস্থান, তেলঙ্গানা এবং পশ্চিমবঙ্গে। কর্মসংস্থান হ্রাস শহরাঞ্চলে স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য সবচেয়ে খারাপ ছিল ৭৬ শতাংশ বেতনভোগী শ্রমিক এবং ৮১ শতাংশ নৈমিত্তিক বেতন পাওয়া কর্মীর তুলনায়। গ্রামাঞ্চলে ৬৬ শতাংশ নৈমিত্তিক মজুরির পাওয়া কর্মীরা কর্মসংস্থান হারিয়েছেন যাদের মধ্যে ৬২ শতাংশ বেতনভোগী শ্রমিক এবং ৪৭ শতাংশ গ্রামের শ্রমিক রয়েছেন। এখনও অবধি নিযুক্ত কৃষিক্ষেত্র স্বনির্ভর কর্মজীবী কর্মীদের জন্য গড়ে সাপ্তাহিক আয় ৯০ শতাংশেরও বেশি কমে ২২২৪ টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২১৮ টাকা। নৈমিত্তিক কর্মীদের ক্ষেত্রে, ফেব্রুয়ারিতে গড় সাপ্তাহিক আয় ৯৪০ টাকা থেকে কমে অর্ধেক হয়ে ৪৯৫ টাকাতে দাঁড়িয়েছে। এই তথ্য লকডাউনের পর সমীক্ষা চালিয়ে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত বেতনভোগী শ্রমিকের ৫১ শতাংশের বেতন হ্রাস পেয়েছে বা বেতন পাননি। প্রায় অর্ধেক (৪৯ শতাংশ) পরিবার জানিয়েছে যে তাদের কাছে এক সপ্তাহের বেশী প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার মতো বেশি টাকা নেই। তথ্যে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ৮০ শতাংশ শহরের পরিবার এবং ৭০ শতাংশ গ্রামীণ পরিবার আগের তুলনায় কম খাবার গ্রহণ করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যেখানে শহরের গরিব পরিবারের ৩৬ শতাংশ সরকারের থেকে আর্থিক অনুদান পেয়েছে সেখানে গ্রামের ৫৩ শতাংশ মানুষ সরকারের থেকে আর্থিক অনুদান পেয়েছে।