কে হচ্ছেন বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী?
বার্তা ডেস্ক :: যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করবেন- এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। কে হতে পারেন বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী? সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় এক ডজনেরও বেশি নাম নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে থাকা জো বাইডেন অবশ্য কাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বানাতে চান, সেই বিষয়ে তেমন কোনো ইঙ্গিত দেননি। ব্যক্তিগতভাবে তিনি নিজে একজন পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে। জয়ী হলে কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দেয়ার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন তিনি। মার্কিন রাজনীতি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো’র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন গণমাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত বিভিন্ন নিবন্ধে উঠে আসছে অনেক সম্ভাব্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম। তাদের মধ্যে রয়েছেন ডেলাওয়ারের সিনেটর ক্রিস কুনস।
ডেলাওয়ারেই এক সময় সিনেটর ছিলেন বাইডেন। ক্রিস কুনস তার উত্তরসূরি। জুইশ ইনসাইডার, ফরেইন অ্যাফেয়ার্স, ওয়াশিংটন পোস্টসহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কলাম প্রকাশিত হয়েছে। কুনসের সমর্থকরা তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে একটি বিশেষ নথিও প্রস্তুত করেছে। কুনস নিজেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। রিপাবলিকানদের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সিনেটে বিল পাসে অনুমোদন পাওয়া এতে কিছুটা সহজ হতে পারে তার জন্য।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে উঠে এসেছে কানেকটিকাটের সিনেটর ক্রিস মারফির নামও। সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্যানেলগুলোয় প্রায়ই তার মুখ দেখা যায়। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ে বেশ লেখালেখিও করেন তিনি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও পুনরায় পদটি গ্রহণের চেষ্টায় আছেন বলে জানা গেছে। গত মাসের শেষের দিকে এক প্রতিবেদনে অভ্যন্তরীণ সূত্রের বরাত দিয়ে পলিটিকো জানায়, ক্লিনটনের টিম প্রত্যাশা করছে বাইডেনই জয়ী হবেন। আর জয়ী হলে, তিনি যেন ক্লিনটনকেই নিজের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন, সেজন্য ইতোমধ্যেই পরিকল্পনা শুরু করেছে তারা। বাইডেনের ঘনিষ্ঠ চক্রের কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা সুজান রাইস। তিনি বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন বলেও গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল।
সুজান রাইস প্রেসিডেন্ট ওবামার সময় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত ছিলেন। পরে হয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাও। পররাষ্ট্র, কূটনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে অভিজ্ঞ এই কৃষ্ণাঙ্গ নারীও হয়ে যেতে পারেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া সাবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও তালিকায় রয়েছেন। বাইডেনের নির্বাচনী শিবিরের অন্যতম জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তিনি। বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আরও কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছেন, ওবামা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে রয়েছেন সামান্থা পাওয়ার। তিনি পূর্বে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে কাজ করেছেন। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আরও রয়েছেন টম ডনিলন। ওবামা প্রশাসনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। বাইডেনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে তার। সবশেষে রয়েছে ওয়েন্ডি শেরমানের নাম। ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করার পেছনে তিনি মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
অন্য জনপ্রিয় প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন প্রবীণ ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তা উইলিয়াম বার্নস। ওবামার আমলে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন। তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক নীতিনির্ধারণী ও থিংকট্যাংক কম্যুনিটির অত্যন্ত পরিচিত মুখ। বার্নসের মতো আরেকজন প্রার্থী হচ্ছেন নিকোলাস বার্নস। বর্তমানে হার্ভার্ডের শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। তবে জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্ডারসেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।