খালেদা জিয়ার দুই মামলার পরবর্তী শুনানি ৩ আগস্ট
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আদালত আগামী ৩ আগস্ট দিন রেখেছেন। ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত পঞ্চম বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাক্ষীদের জেরা ও পুনর্জেরার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে গত ২০ জুলাই খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারির রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি মুলতবি করে অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়ার হাজিরার ক্ষেত্রে যে সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
মামলায় খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, সানাউল্লাহ মিয়া, আমিনুল ইসলাম, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সানাউল্লাহ মিয়া জানান, আজ আদালতে এ মামলার নয় সাক্ষীকে জেরা ও দুই সাক্ষীকে পুনর্জেরার আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তা নাকচ করে দিয়েছেন। তবে খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোন বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশিদ। ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। মামলার বিচারকার্যে ইতোমধ্যে দুদকের পক্ষের ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শেষ হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন পর্যায়ে রয়েছে।
অপরদিকে, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ। পরে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। মামলার সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। এ ছাড়া তারেক রহমানের জামিন বাতিল করে দেন আদালত।