গুলতেকিন করলে ‘লীলা’ আর আমি করলে দোষ : তসলিমা
তসলিমা নাসরিন এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকেঃঃফেসবুক হুমায়ুনে টইটম্বুর। হুমায়ুনের বউ বুড়া বয়সে বিয়া করছে, তাতেও হাত্তালির সীমা নাই। মহিলারা বুড়া বয়সে বিয়া করলে সমাজ কোনও প্রব্লেম করে না, উল্ডা খুশি হয়, কবে হইলো বাংলাদেশ এত্ত উদার, এত্ত নারী ফ্রেন্ডলি? আমার বয়সও তার মতই, কিন্তু আমি যদি এখন বিয়া করছি ঘোষণা দেই, আমার চামড়া ছিইল্ল্যা মাইনষে লবন লাগাইবো,আর আমারে জ্যান্ত কব্বর দিবো, ফেসবুক ভাসাইয়া ফেলবো খাপসা গালি দিয়া, আমারে কুত্তা দিয়া কী করবো কইয়া আর আমার ইনবক্স গান্ধা বানাইবো তাগোর ইয়ের ছবি পাঠাইয়া। হুমায়ুন তার বউরে তালাক দিয়া কচি একটা ছেড়িরে বিয়া কইরা দূরে চইলা গেসে, আমোদে আহ্লাদে রাজার জীবন যাপন করছে, খরচপাতি দেয় নাই, বউ এক্লা এক্লা পুলাপান মানুষ করছে, — এই কারণে বউয়ের লাইগ্যা মাইনষের করুণা জন্ম নিসে। এত সেক্রিফাইস যে করছে স্বামীর জন্য, স্বামী মইরা যাওয়ার পর, পুলাপান মানুষ হইয়া যাওয়ার পর না হয় তার একটু সাধ আহ্লাদ মিটাক। অভিনন্দন ওই করুণা থেইকাই আসতাসে।
আমার কথা বাদ দিলাম। অন্য কোনও মহিলা, যে মহিলা স্বামীর জন্য সেক্রিফাইস করে নাই, পুলাপানের কথা ভাইবা নিজের সাধ আহ্লাদ বিসর্জন দেয় নাই, হুমায়ুনের বউয়ের মতো বুড়া বয়সে বিয়া একবার সে করতে চাক না— গাইল্যাইয়া তার গুস্টি উদ্ধার করবো মানুষ। এক মহিলার বুড়া বয়সের বিয়া মাইনা নিসে সমাজ। তার মানে কিন্তু মেয়ে- মহিলারা যা ইচ্ছা তাই করনের সুযোগ পাইয়া গেসে তা না। পাইয়া গেসে ভাইব্যা সুখ পাওয়ার কিছু নাই। বিয়া করাডার নাম নারী স্বাধীনতা না। বরং উল্ডা। বিয়া না কইরা, ত্যাগ না কইরা, মাইনষের করুনার পাত্রী না হইয়া, পরনির্ভর না হইয়া, মাথা উচা কইরা বাচার নাম নারী স্বাধীনতা। ভুইলা গেলে চলবে না বিয়া জিনিস্টাই নারী বিরোধী।