ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়া কেনো তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না সে ব্যাপারে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।  গতকাল বুধবার জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট ফরিদ আহমেদের পাঠানো ই-মেইল বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য ফেসবুকে লেখায় এবং তা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া আওয়ামীপন্থি চিকিৎসক সংগঠন স্বাচিপ-এর সাবেক এই সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে জানা গেছে।   বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনে সভাপতি ডা. বাহারুল চুক্তির বিভিন্ন দিক পয়েন্ট আকারে তুলে ধরে লেখেন, শক্তিধর প্রতিবেশীর আধিপত্যের চাপ এতোই তীব্র যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বজায় থাকবে কিনা আশঙ্কা হয়। গত ৬ তারিখ বিকাল ৫টা ২৪ মিনিটে দেয়া ওই স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন-‘ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বলা হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ ও অধিকার চরম উপেক্ষিত

………………………
দুর্বল অবস্থানে থেকে বন্ধু-প্রতিম শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বৈঠকে-ফলাফল শক্তিধরের পক্ষেই আসে। বাংলাদেশ-ভারত উভয়-পক্ষীয় সমঝোতা স্মারক নাম দেয়া হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয় দুর্বল রাষ্ট্রকে। ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সকল স্বার্থই আদায় করে নিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ ভারতের কাছ  থেকে এখনও ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারে নি ।

১) দীর্ঘদিনের আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন এবারের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় স্থান পায়নি।
২) ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্ হুংকার দিয়েছে নাগরিক পঞ্জীতে বাদ পড়া জনগণকে বাংলাদেশে ঠেলে  দেয়া হবে। তারপরেও এবারের সমঝোতা চুক্তিতে ‘অভ্যন্তরীণ’ অজুহাতে বিষয়টি স্থান পায়নি।
৩) বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থী মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবসনের বিষয়ে ভারত কিছু বলেনি ।
৪) তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে চুপ থাকলেও বাংলাদেশ অংশের ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরা রাজ্যের পানীয় জল হিসাবে প্রতিদিন ১.৮২ কিউসেক টেনে নেবে ভারত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।
৫) বাংলাদেশের জনগণের তরল গ্যাসের চাহিদা পূরণের ঘাটতি থাকলেও ভারতে তরল গ্যাস রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং যৌথভাবে সে প্রকল্প উদ্বোধনও হয়েছে।
৬) চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারত কীভাবে ব্যবহার করবে, তা নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য ভারতের কোনও বন্দর সেই তালিকায় ছিল না। অমানবিক আচরণের শিকার হয়েও বাংলাদেশ পানি ও গ্যাস সরবরাহ দিয়ে মানবিকতার প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ ও অধিকার উপেক্ষিত রেখে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষ হয়েছে। শক্তিধর প্রতিবেশীর আধিপত্যের চাপ এতোই তীব্র যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বজায় থাকবে কিনা আশঙ্কা হয়। কারণ ভারতের চাপিয়ে দেয়া সকল সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে মেনে নিতে হচ্ছে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn