হেলাল আহমদ-

‘গেল রোরোর সময়ে কয়েক হাজার টাকা ধার-কর্জ করেছি। বন্যায় জমির সব ধান শ্যাষ হইয়া গেলো। এইবার আবার ধারদেনা করে আমন লাগাচ্ছি। আশা করেছি এইবার জমিতে ভাল ধান হইলে ধারদেনা থাইক্যা মুক্তি পাবো।’ এমন কথাগুলো বলছিলেন ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের সিংচাপইড় গ্রামের কৃষক মো. ইনসান আলী। বোরোতে লোকসানের ক্ষোভ ও কষ্ট থাকলেও আমন মৌসুমে লাভের আশায় জমিতে ধানের চারা লাগাচ্ছেন তিনি। আরেক কৃষক একই গ্রামের দরছ আলী বলেন, ‘আমরা কৃষক মানুষ। জমিতে চাষ করে যা পাই তা দিয়াই সংসার চালাই। গেল বন্যায় বোরো যা লাগাইছিলাম সব পানিতে গেলো। এবার ধার-কর্জ করে আমন লাগাচ্ছি। দেখি আল্লায় কি করে।’শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, বর্ষার ভরা মৌসুমে উপজেলার চারদিকে চলছে আমন রোপণের ধুম। দেখা গেছে কৃষকদের ব্যস্ততার চিত্র। কেউবা জমি তৈরি, কেউবা বীজতলা থেকে বীজ তোলা, কেউবা পানিতে টইটুম্বুর জমিতে উৎসবমুখর পরিবেশে চালিয়ে যাচ্ছেন চারা রোপণের কাজ। দেখা মিলছে দল বেঁধে চারা লাগানোর চিত্রও। সিংচাপইড় ইউপির সোনারতাল হাওরের শ্রমিক নবীর আলী বলেন, ‘আমরা ৪জনে এক কেয়ারের এই জমিটা চুক্তিতে নিয়েছি। চারা রোপণের পর ৮শত টাকা পাবো। তিনি জানান, রাতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। জমিতে আটকা রয়েছে যথেষ্ট পানি। যার ফলে চারা লাগাতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য পাচ্ছি আমরা।’ সেখানকার আরেক কৃষক বলেন, ‘এবারের আমন মৌসুমে ধানের ভালো বাজার পাওয়া যাবে। আল্লাহ চাইলে এবার কারো লোকসান হইবে না।’  উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় অনেকটা আগে ভাগেই আমন আবাদে নেমে পড়েছেন কৃষকরা। আগাম ধানের চারা রোপণ করায় ক্ষতি থেকে রক্ষা, উৎপাদন এবং দাম ভালো পাবেন বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

 

 

 

 

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn