জগন্নাথপুরে সামাদ আজাদের নাতি সিদ্দিক কারাগারে, উত্তেজনা
জগন্নাথপুরে সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুস সামাদ আজাদের নাতি সিদ্দিকুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেই সাথে বইছে প্রতিবাদের ঝড়। গ্রেফতারকৃত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ছিদ্দিকুর রহমানকে সোমবার সুনামগঞ্জ কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।এরআগে রবিবার বিকেলে জগন্নাথপুর সদর বাজারের মাদ্রাসা পয়েন্টে অবস্থিত নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদের নাতি, উপজেলা হাওর উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার ভূরাখালি গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমানকে (৪৫) গ্রেফতার করে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ওসি হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানান, তার চাচাতো ভাইয়ের দায়ের করা একটি সংঘর্ষের মামলায় সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে-সিদ্দিকুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় ডন গ্রুপের নেতাকর্মী, কৃষক-শ্রমিক, ব্যবসায়ী সহ সর্বস্তরের জনতার মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ দিন রাতে সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে স্থানীয় মাদ্রাসা পয়েন্টে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আ.লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মনাফের সভাপতিত্বে ও উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান চৌধুরী সুফি মিয়া, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য সৈয়দ ছাব্বির আহমদ, কলকলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাসিম, আ.লীগ নেতা শাহিদুল ইসলাম বকুল, শাহ আবদুর রাজ্জাক, সাংবাদিক তাজ উদ্দিন আহমদ, আ.লীগ নেতা সালাহ উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর আবাব মিয়া, জগন্নাথপুর বাজার সেক্রেটারি জাহির উদ্দিন, বাজার বণিক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা সাবুল মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহবায়ক হাবিবুর রহমান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহবায়ক ছালিক আহমদ ডন, যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন, আনোয়ার কোরেশী, সেলিম মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মকসুদুল হক, ফারুক আলী, আক্তার হোসেন, আক্তার হোসেন সিরাজ, জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রলীগ নেতা মুহিন মিয়া প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক পক্ষের ষড়যন্ত্র মূলক মামলায় সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে দিনে গ্রেফতার করলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ আদালতে মামলা সংক্রান্ত কোন কাগজ পত্র পাঠানো হয়নি। এতে প্রতীয়মান হয়, কোন প্রকার মামলা ছাড়াই কোন মহলকে খুশি করতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। বক্তারা আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, অবিলম্বে তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, জগন্নাথপুরে আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন যাবৎ দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দুটি গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দলের প্রেক্ষিতে এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে ঘায়েল করতে প্রায়ই মারমুখি বক্তব্য দিতে দেখা যায়। এক গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতি মন্ত্রী এম.এ মান্নান, অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের পূত্র আজিজুস সামাদ আজাদ ডন।