জিন্নাহর পরিবর্তে বিদ্যালয়ের নাম”রুপাবালী”
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর জামালগঞ্জ থেকে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা জিন্নাহর নাম বিদ্যালয় থেকে পরির্বতন করা হয়েছে। পাকিস্তানের জিন্নাহর নামে জামালগঞ্জে বহাল তবিয়তে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম ছিলো। এই নিয়ে গেল বছরের ১২ ডিসেম্বর জামালগঞ্জ উপজেলা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি আকবর হোসেন অভিযোগকারি হিসেবে নাম পরিবর্তন করার জন্য লিখিত ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলেন।দীর্ঘদিন ধরে চিঠি চালাচালির পর জামালগঞ্জের সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষা বিভাগকে পত্র জারি করে দ্রুত নাম পরিবর্তন করার নির্দেশ প্রদান করলে নামটি পরিবর্তন করা হয়। জিন্নাহ মোমোরিয়েল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামের স্থলে বর্তমানে গ্রামের নামে রুপাবালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে নামকরণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানাযায়,জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের পাকিস্তানের কিংবদন্তি নেতা কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নার নামে প্রতিষ্ঠা করা হয় জিন্নাহ মেমোরিয়েল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়ন ঘেষা সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে সাচনাবাজারের একটি গ্রাম রুপাবালী। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাজনের সময়ই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সাচনাবাজার ইউনিয়নের রুপাবালী আর দক্ষিণ সুনামগঞ্জের কান্দাগাও গ্রামবাসীর উদ্দ্যোগে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রথম থেকেই দু-গ্রামের মানুষের মধ্যে নাম নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে রুপাবালী গ্রামের ভূমিদাতা আ: রাজ্জাক তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানের লৌহ মানবকে খুশী করতে তার নামে বিদ্যালয়ের নাম রাখেন জিন্নাহ মেমোরিয়েল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার
পর এক দফা উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেন এলাকার ক’জন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আর বাস্তবে রূপ নেয়নি নাম পরিবর্তন করার বিষয়টি। বর্তমান সরকার ক্ষমতার আসার পর স্থানীয় তরুণ প্রজন্মের কজন ব্যক্তি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করলে প্রশাসনের নজর কাড়ে। জিন্নাহ মেমোরিয়েল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্যাণব্রত তালুকদার বলেন, আমি ২০০৫ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ে আছি, নামটি পরিবর্তন হোক আমি প্রথম থেকেই চেয়েছি।এত দিনে আমরা সফল হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আ: আজিজ বলেন, জিন্নাহর নাম পরিবর্তন হওয়াতে আমরা এলাকাবাসীর দায়মুক্তি হয়েছে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জিন্নাহর মেমোরিয়েল বিদ্যালয়ের নামের স্থলে বিদ্যালয়টি যে গ্রামে অবস্থিত সেই রুপাবালী গ্রামের নামে ্ধসঢ়;ইতিমধ্যে নামকরণ করা হয়েছে। জামালগঞ্জের সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসূন কুমার চক্রবর্তী বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের নামে প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আদেশ পেলে আমি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করি। ইতিমধ্যে জিন্নাহ মোমোরিয়েলের নাম পরিবর্তন করে রুপাবালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে।