বার্তা ডেক্সঃঃগরুর মাংস অনেকেরই পছন্দ কিন্তু, জ্যান্ত গরু মাঠে চরছে আর তাকে ধরে বেঁধে জীবিত অবস্থায় এর রক্ত, অণ্ডকোষ, ভুঁড়ি, নাভি কাঁচা খেয়ে ফেলার কথা শুনেছেন কখনও? অদ্ভুত ও অবাক করা এমন ঘটনা এক কিশোর (১৮) ঘটিয়েছে আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার তারাগনে। এলাকাবাসী জানান, তারেক (১৮) নামে এক কিশোর মাঠে ঘাস খাওয়া এক গরুকে ধরে প্রাণীটির চার পা বেঁধে এটিকে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর গরুটির পায়ুপথ ও এর আশপাশের অংশ ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে গরুর রক্ত,অণ্ডকোষ, ভুঁড়ির কিছু অংশ, নাভি ইত্যাদি প্রত্যঙ্গ কেটে বের করে এনে খেয়ে ফেলে। এ খবর মহুর্তে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের শত শত লোক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ ঘটনার পর ওই কিশোরকে স্থানীয় লোকজন আটক করে। আটক তারেক একই এলাকার মো. আমাল খাঁর ছেলে।
ঘটনা সম্পর্কে গরুর মালিক তারাগন পশ্চিম পাড়ার মো. আবু তাহের মিয়া বলেন,‘কিছুদিন আগে প্রায় ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি গরুটি কেনেন। প্রতিদিনের মতো গরুটিকে বাড়ির কাছের খোলা মাঠে ছেড়ে দিয়ে ঘাস খেতে দেন তিনি। দুপুরে গরুটিকে দেখতে গেলে তিনি দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাণীটি মাটিতে পড়ে আছে ও ছটফট করছে। সেই সাথে গরুর নারী-ভুঁড়ি,নাভিও পড়ে আছে। এ অবস্থায় ওই ছেলে আমাকে দেখতে পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তার পোশাকে রক্ত দেখে তাকে সন্দেহ করি। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ধাওয়া করে তাকে আটক করা হয়। এরপর সে গরুর পেছনের অংশ কেটে ওইসব খেয়েছে বলে স্বীকার করে। এদিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় গরুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে লোকজনের পরামর্শে গরুটিকে জবাই করা হয়।’আক্ষেপ করে গরুর মালিক মো. আবু তাহের আরও বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এই গরুটি ক্রয় করেছিলাম। কিন্তু এ ঘটনায় আমার বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন,‘মানুষকে কত কিছু খেতে দেখেছি। কিন্তু, জ্যন্ত গরুর শরীর থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে খেতে দেখিনি।’ স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মুর্শেদ মিয়া বলেন,‘আগে মাঠে গরু ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়িতে গিয়ে অন্যান্য কাজ করেছি। এখন দেখছি সতর্ক ছাড়া উপায় নাই। আমার জীবনে এমন ঘটনা দেখিনি।’ আখাউড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মানিক মিয়া বলেন, এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। ধারণা করা হচ্ছে ওই ছেলেটি মানসিক সমস্যা রয়েছে। ওই ছেলের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মো. কামাল বাশার বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে দ্রুত খোঁজ খবর নিতে লোক পাঠিয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কিশোরটির মানসিক সমস্যার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।’ এদিকে খবর পেয়ে তারেকের বাবা মো. আমাল খাঁ ঘটনাস্থলে এসে ক্ষতিগ্রস্ত গরুর মালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। সে এমনটা কেন করলো তিনি নিজেও বুঝতে পারছেন না। তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।