ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয়নি ছাত্রলীগ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিজেরা ডাকসু চান দাবি করলেও উল্টো ডাকসুর দাবিতে আয়োজিত উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিতে আসলে ছাত্রদলকে ধাওয়া দিয়েছে ছাত্রলীগ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মধুর ক্যান্টিনের সামনে উন্মুক্ত আলোচনার ডাক দেন ডাকসুর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে ছাত্রশিবির ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র সংগঠনকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। আলোচনা আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন নেতা-কর্মী মধুর ক্যান্টিনে আসেন। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের ধাওয়া দেন।

পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ হয়ে চারুকলা অনুষদের সামনে সোহওয়ার্দী উদ্যানের গেইট ও কয়েকজন শাহবাগ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় ছবির হাট এলাকায় হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মামুনকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।এ বিষয়ে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সব সময় চাই ডাকসু নির্বাচন হোক। এজন্যই ডাকসুর দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়েজিত উন্মুক্ত আলোচনায় যোগ দিতে আমরা ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এর মাধ্যমে তারা আবারও প্রমাণ করলো তারা ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস করে একক আধিপত্য বজায় রাখতে চায়।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, ছাত্র দল বিভিন্ন অজুহাতে ক্যাম্পাসে ঢুকে বিশৃঙ্খলা করতে চায়। এর আগেও তারা এমনটা করেছে। আরা তারা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়। তাই ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের বাঁধা দিয়েছে। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ না নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ডাকসুর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কোনো আমন্ত্রণ তিনি পাননি। আর উন্মুক্ত আলোচনার বিষয়ে আগে থেকে আমাদের সাথে কোনো আলোচনাও করা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে ডাকসুর দাবিতে উন্মুক্ত আলোচনার সমন্বয়কারী মাসুদ আল মাহদী বলেন, উন্মুক্ত আলোচনায় অংশে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র সংগঠনগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আলোচনা শুরুর আগেও সকল সংগঠনকে ফোন করা হয়েছে। প্রত্যেক সংগঠন থেকে তিনজন প্রতিনিধিকে পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু ছাত্রদল অনেক নেতাকর্মী নিয়ে ক্যাম্পাসে শোডাউনের মতো করে উপস্থিত হয়। যেহেতু তারা শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ পেয়ে এসেছিল তাদের ধাওয়া করাটা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঠিক হয়নি। ছাত্রলীগকে আমন্ত্রণ জানালেও তারা আলোচনায় অংশ নেননি। এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো যে তারা মুখে ডাকসুর দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তারা ডাকসু চায় না। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের দুই অংশ, বাসদ (খালেকুজ্জামান) সমর্থিত সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাসদ (মার্ক্সবাদী) সমর্থিত সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাসহ বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী। আলোচনায় তারা অবিলম্বে ডাকসুর দাবি জানান।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn