সন্তান প্রসবের সময় রোগীর পেটে গজ রেখেই অপারেশন শেষ করা কথিত চিকিৎসক রাজন দাসকে আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রেফতার করে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ পটুয়াখালীর বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এ নির্দেশ দেন। রাজন দাসকে গ্রেফতারে প্রয়োজনে র‍্যাবের সহায়তা নিতে বলা হয়েছে। শুনানির শুরুতে বাউফল থানার ওসি মনিরুজ্জামান আদালতকে বলেন, ভুয়া ডাক্তার রাজন দাশকে গ্রেফতার করতে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। এখন পর্যন্ত তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এসময় আদালত বলেন, আপনার চাইলে তাকে ধরতে পারবেন। প্রয়োজনে র‍্যাবের সহযোগিতা নিন। এর আগে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে রাজন দাসকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জনের পক্ষে দাখিল করা প্রতিবেদনে ডাক্তার নামধারী রাজন দাসের সার্টিফিকেট ভুয়া প্রমাণিত হয়। গত ২৩ জুলাই পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ও বরিশাল মেডিক্যালের গাইনি বিভাগের প্রধানসহ তিন জনকে তলব করেন হাইকোর্ট।

২২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সাড়ে তিন মাস পর পেট থেকে বের হল গজ!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শহিদ উল্লা আদালতের নজরে আনেন। ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিন মাস পর বরিশালে মাকসুদা বেগম (২৫) নামের এক নারীর পেট থেকে গজ বের করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেন, দীর্ঘদিন পেটের ভেতর গজ থাকায় খাদ্যনালীতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়ে গেছে।…গত মার্চে অস্ত্রোপচার করে মাকসুদা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তখন তার পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক।’ প্রতিবেদন অনুসারে, এর দুই মাস পর মাকসুদার খিঁচুনি দিয়ে জ্বর আসে। গত জুনে বরিশাল মেডিক্যালের বহির্বিভাগে দেখানো হলেও কিছু ধরা পড়েনি। পরে পটুয়াখালীতে এক চিকিৎসককে দেখানোর পর তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। ১২ জুলাই হাসপাতালে মাকসুদার অস্ত্রোপচার করে পেটের ভেতর থেকে গজ বের করা হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn