তাহিরপুরের ইউএনও’র হুমকি: এই বেডি গিল্ল্যা খাইয়া ফালামু
তাহিরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এক আদিবাসী নারীকে মোবাইলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে উল্টো তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে বুধবার আদিবাসী নারী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক নারী ইউপি সদস্য ও ট্রাইবেল ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য শ্রী অনুরাধা দেবী হাজং বুধবার জানান, সম্প্রতি উপজেলার নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জন্য ইউএনওর দফতরে সরকারি অনুদানের ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে। এ বিষয়ে ট্রাইবেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হিসেবে কীভাবে এই অর্থ ব্যায় করা হবে তা জানতে দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে কয়েকজন আদিবাসীকে নিয়ে ইউএনওর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা পাইনি। পরবর্তীতে অনুরাধা দেবী হাজং ইউএনওকে মোবাইলে কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এক পর্যায়ে ২৫ জুন রোববার এ বিষয়ে জানতে ও সাক্ষাত না পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ফের ইউএনওকে মোবাইলে এসএমএস পাঠান তিনি। এসএমএস প্রাপ্তির কিছুক্ষণ পর ইউএনও নিজেই তার মোবাইল (০১৭৩৬-০১১৪৬৬) থেকে অনুরাধা দেবীর ব্যক্তিগত নাম্বারে কল করে বলতে থাকেন, এ তুমি কী বেগম শ্রী অনুরাধা দেবী হাজং? তুমি আমায় কল করছ কেন? সংযোগ বিচ্ছন্ন হয়ে গেলে ফের অনুরাধা দেবী নিজের পরিচয় দিয়ে ইউএনওর সঙ্গে মোবাইলে আলাপ করার এক পর্যায়ে ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে অনুরাধা দেবী হাজংকে উদ্দেশ করে বলতে থাকেন, ‘তাফালিং করা শুরু করছেন, পলিটিক্স করা শুরু করছেন,এই বেডি গিল্ল্যা খাইয়া ফালামু, তুই আমাকে ফোন দিলি কেন?, আমারে আর কোনোদিন ফোন দিবি না, আমি কী আমার অফিস সঙ্গে নিয়া ঘুরি, টাউটের দল, এখানে খাওয়ার জন্য সব জিহ্বা বের করে রাখছে।’
শ্রী মতি অনুরাধা দেবী হাজং বুধবার ইউএনওর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, কল লিস্ট চেক করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে তিনি যে আমাকে কল করেছিলেন, আমি ভয়েজ রেকর্ড সংরক্ষণ করেছি, অভিযোগের সঙ্গে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে সেই অশ্লীল গালি গালাজ- হুমকি দেয়ার ভয়েজ রেকর্ড প্রমাণ হিসেবে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইউএনও এখন মিথ্যাচার করছেন আর সরকারি বরাদ্দের টাকা লুটেপুটে নিতে তিনি মহল বিশেষের প্ররোচনায় আমার মতো একজন নারীর সঙ্গে এমন অসাদাচরণ করেছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলামের কাছে বুধবার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রশাসনের কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার নিকট থেকে কেহই এ ধরনের আচরণ প্রত্যাশা করে না, বিষয়টি আদিবাসী নারী আমাকে ইতিপর্বে মোবাইলে অবহিত করেছেন এবং লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।