তাহিরপুরের শনি হাওরে শনির দশা কাটছে না
জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া-
তাহিরপুরে এক শনি হাওরে যেন হাজারও শনি (অদৃশ খারাপ কিছু) ভড় করছে। তাই শনির দশা কোন ভাবেই পিছু ছাড়ছে না। ঘন্টায় ঘন্টায় পানি বাড়তে থাকায় জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বাঁধ উচুঁ করে ঠিকিয়ে রাখা শেষ চেষ্টায় হাওরে অবস্থান করছে কৃষক,শ্রমিক সহ সর্বস্থরের জনসাধারন। এবার নতুন আতœংক শুরু হয়েছে হাওরে ভুরুংঙ্গা। এই ভুরুংঙ্গা বন্ধ করতে ও বাঁধ রক্ষা কাজ করছে হাজার হাজার শ্রমিক। শেষ রক্ষা না হলে শেষ সম্পদ এই হাওরটির পরিনাম হবে অন্যান্য হাওর গুলোর মত। উপজেলার ছোট বড় ২৩টি হাওরে উৎপাদিত ২শ কোটি টাকার অধিক ফসলের উপর নির্ভর করেই জীবন জীবিকা চলে হাজার হাজার কৃষক পরিবারের। শনি হাওরের বগিয়ানী,লালুরগোয়ালা,ঝালখালি,আহমখখালি,নান্টুখালি,গুরমা এক্সটেশনে বাঁধ গুলোর বুরুংংগা (পানি প্রবেশের ছোট ছোট শুরঙ্গ) দিয়ে হাওরে প্রবেশ করছে পানি। যে কোন সময় ঐসব বাঁধ ভেঙ্গে পানিতে ডুবে যাওয়ার আশংকায় রয়েছে শনি হাওরটি। এসব সব বুরুংঙ্গা বন্ধ করতে ও বাঁধ উচু করতে গত কয়েক সাপ্তাহ ধরেই স্বেচ্ছাশ্রমে প্রান প্রন চেষ্টা করে ঠিকিয়ে রাখচ্ছেন ২টি উপজেলার ৩সহসাধিক কৃষক,শ্রমিক জনতা। অন্যান্য বাঁধ গুলোর সমান সমান পানি। উপজেলায় প্রধান বোরো ধান উৎপাদন সমৃদ্ধ এ হাওরে সাড়ে ৬হাজার হেক্টর ও পাশ্বভর্তি জামালগঞ্জ উপজেলার ৩হাজার হেক্টরের অধিক ও মধ্যনগড় থানার কিছু অংশে বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। উপজেলার সব হাওর হারিয়ে যাওয়ার পরেও সবার আশা অন্তত এই শেষ সম্বল শনির হাওর টুকু রক্ষা করা। প্রতি মুুর্হুতই উৎবেগ আর উৎকন্ঠা বিরাজ করছে কৃষক ও স্থানীয় জনসাধারন মাঝে। হাওরের কোন খবর শুনলেই হতাশায় ভেঙ্গে যায় উপজেলার সবার মন আর সবাই বাঁধে,উড়া,কোদাঁল ও বাঁধ নিয়ে ছুটে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে পড়ে। কারন এই হাওরের একটি বাঁধ ভেঙ্গে গেলে শনি হাওর রক্ষা আর কোন উপায় থাকবে না। গুরুত্ব সহকারে বাঁধে কাজ করছেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল,ইউপি চেয়ারম্যান সহ উদীয়মান তরুন সমাজ সেবক ও হাজার হাজার কৃষক,শ্রমিক জনতা নিঃশ্বার্থ ভাবে।
উপজেলার সচেতন এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন-প্রতিটি বাঁধে পুকুর চুরি না করে একবারেই ডাকাতি করেছে যার জন্য হাজার হাজার কৃষকের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষার বাঁেধ এ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাউকে দেখা যায় নি। এই ফসল ফলাতে কৃষকরা এনজিও,ব্যাংক ও মহাজনের কাছ থেকে ছড়া সুদে নেওয়া ঋন নেওয়ায় পরিশোধ নিয়ে হতাশায় ভুগছে হাওর পাড়ের কৃষকরা। হাওরের বাঁধে অবস্থানকারী হাজার হাজার লোকজন জানান,হাওরে প্রতিটি বাঁধের সমান সমান পানি রয়েছে। মাঝে মাঝে পানি বাড়ায় বাঁধের উপর দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। বাঁধ রক্ষায় সবাতর্œক চেষ্টায় করছি সবাই। গত বছর বদলী হওয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন (বর্তমানে মৌলভী বাজার জেলায় আছেন) ও ওসি শহীদুল্লাহ (বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদরে থানায় আছেন) এই হাওরের বাঁধ গুলো রক্ষায় প্রতিটি বাঁধে নিরলশ ভাবে দিন-রাত বাঁধ গুলোতে কাজ করেছেন। এই হাওর বাসীর জন্য তারা থাকলে এই হাওরের এমন হত না তাদের মত কর্মকর্তা আবারও এই উপজেলায় প্রয়োজন। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-সর্ব শেষ উপজেলার শনির হাওরের প্রতিটি বাঁধ এখন ঝুঁিকর মধ্যে আছে শেষ রক্ষা করতে পারব কি না জানি না আল্লাহ ভাল জানে। সঠিক ভাবে বাঁধ নির্মাণ না করার কারণে একের পর এক হাওর ডুবছে। শনি হাওরের বাঁধ রক্ষায় আমি সহ হাজার হাজার শ্রমিক,কৃষক সবাই অবস্থান করছি। সুনামগঞ্জ জেলা দূর্গত এলাকা ঘোষনার দাবী জানাই।