তিন মামলায় গয়েশ্বর, রিজভীসহ ৯০০ আসামি।। ধরপাকড় শুরু
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাজিরা দেয়াকে কেন্দ্র করে হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় ধর-পাকড় চলছে রাজধানীতে। হামলায় জড়িতদের ধরতে নেতাদের বাসায় বাসায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। গতকাল পর্যন্ত ৬৫ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। ওই দিনের ঘটনায় রমনা ও শাহবাগ থানায় দায়ের করা তিন মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ৫৫ জনকে দুইদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিন মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদকে নির্দেশদাতা উল্লেখ করে ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৬৯ জনকে গ্রেপ্তারের পর রাজধানীতে পুলিশ শুরু করেছে ধর-পাকড়। মঙ্গলবার রাতভর পুলিশ অভিযান চালিয়েছে বিএনপি ও অঙ্গদলের অন্তত শতাধিক কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতার বাসায়। রাতে গুলশানের পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও শান্তিনগরের বাসা থেকে সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনকে তিনদিন করে ও ৫৩ জনকে ২ দিনের করে রিমান্ডে নিয়েছে শাহবাগ ও রমনা থানা পুলিশ। এদিকে গতরাতে বিএনপির নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিজভী আহমেদ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি কার্যালয়েই অবস্থান করছিলেন।
ওদিকে খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে হাইকোর্ট এলাকায় গতকাল তাকে অভ্যর্থনা জানাতে জড়ো হওয়াদের মধ্যে মহিলা দল নেত্রী রাজিয়া আলিম ও হোসনে আরাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে হঠাৎ ধর-পাকড়ের ঘটনাকে অশুভ ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুলিশের ওপর হামলাকারীদের অনুপ্রবেশকারী আখ্যায়িত করে বিএনপির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে নস্যাৎ করতে সরকার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে উসকানিমূলক কর্মকা- করছে বলে অভিযোগ করেছেন। এদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব দলের গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি পেয়ারা মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি নেতা এম মিন্নত আলী, হারুন অর রশীদ, হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, সাইদুর রহমান, বুলুু, খোকন সরকার, কবির, ডল, স্বেচ্ছাসেবক দল উত্তরখান থানা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহাগর দক্ষিণ বিএনপি নেতা বাবুল, মানিক, মতিউর রহমান, আলামীন, জামান আহমেদ পিন্টু, ইসমাইল হোসেন তালুকদার, মহিলা দল নেত্রী আরজু, শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর নেতা জিল্লুর রহমান, আলম, জসিম ও আলম দেওয়ানসহ প্রায় ৭০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের বাসভবনে হানা দিয়ে দেশের বর্ষীয়ান এ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদের খোঁজ নেয়। এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানের ধানমন্ডির বাসভবন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর শান্তিনগরের বাসভবন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সার্কিট হাউজ রোডের বাসা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দিলু রোডের বাসা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসানের পল্লবীর বাসভবন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক সিকদার, সাবেরা আলাউদ্দিন, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী আজিজুল হাকিম আরজু ও জিঞ্জিরা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মামুনের বাসাসহ শত শত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশির নামে তা-ব চালিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীকে মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করছে পুলিশ।
গতকাল সন্ধ্যায় আলাদা সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া আদালত থেকে ফেরার পথে বুধবার দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহিলা দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিয়া আলিম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-গণসংযোগ সম্পাদক আমজাদ হোসেন শাহাদাৎ, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুল জাব্বার, যুবদল নেতা মো. রুবেল, মো. হানিফ, মো. দুলাল, মামুন আহম্মেদ, রাকিব আকন্দ, মহিলাদল নেত্রী হোসনা, পারভিন, দিথি, লায়লা, জাকিয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান চেয়ারম্যান, চকবাজার বিএনপি নেতা ফরিদ উদ্দিন জুয়েল, ইবরাহিম, উত্তরা পূর্ব থানার শাহ আলম, মাহবুব খান, সোকন মিয়া, মিন্নাত আলী ও যাত্রাবাড়ীর আমিনুর রহমানসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়াও পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। রিজভী বলেন, বুধবার বিকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি ও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফাওয়াজ হোসেন শুভ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম এবং ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি ও বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজের বাসভবনে তল্লাশি চালিয়েছে ডিবি পুলিশ।
তিন মামলায় আসামি ৯০০: রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় রমনা ও শাহবাগ থানায় দায়ের তিন মামলায় ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। হামলার নির্দেশ দাতা হিসেবে তিন মামলায়ই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক রহিদুল ইসলাম ও এসআই চম্পক বাদী হয়ে শাহবাগ থানা পৃথক দুটি এবং রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিবুল্লাহ রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সরকারি কাজে বাধা দেয়া, পুলিশের ওপর হামলা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘœসহ বেশ কয়েকটি ধারা জুড়ে এসব মামলা করা হয়েছে। রমনা থানার মামলায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে শাহবাগ থানায় দুটি মামলায় রুহুল কবির রিজভীসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এদিকে দুইদিনে রমনা ও শাহবাগ থানা পুলিশ ৫৬ জন গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল তাদের আদালতে হাজির করা হয়। গ্রেপ্তার ৫৬ জনের মধ্যে ৫৫ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
রমনা থানার দায়ের করা মামলায় আসামি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মাহমুদুল হাছান উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গতকাল এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত ওই মামলার এক আসামিকে একদিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ ও ৩৫ আসামিকে দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া অনিন্দ্য ইসলাম ও কেন্দ্রীয় নেতা আনিসুর রহমানের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে, বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে রমনা থানার পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম এই মামলার আসামি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ৩৮ জনকে আদালতে হাজির করেন। মামলার আসামিদের ১০ দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করেন পুলিশের এই তদন্ত কর্মকর্তা। আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। শুনানি শেষে আদালত রমনা থানার মামলার ৩৮ আসামির মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া, আসামি ফরিদ উদ্দীনকে একদিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ ও বাকি ৩৬ জনের প্রত্যেকের দুইদিন করে পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে একই ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের করা দুই মামলায় ১৮ জন আসামির সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন শাহবাগ থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিদার হোসেন। দুই মামলায় ১৮ জন আসামির প্রত্যেককে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ওদিকে খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে হাইকোর্ট এলাকায় গতকাল তাকে অভ্যর্থনা জানাতে জড়ো হওয়াদের মধ্যে মহিলা দল নেত্রী রাজিয়া আলিম ও হোসনে আরাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে হঠাৎ ধর-পাকড়ের ঘটনাকে অশুভ ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুলিশের ওপর হামলাকারীদের অনুপ্রবেশকারী আখ্যায়িত করে বিএনপির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে নস্যাৎ করতে সরকার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে উসকানিমূলক কর্মকা- করছে বলে অভিযোগ করেছেন। এদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব দলের গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি পেয়ারা মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি নেতা এম মিন্নত আলী, হারুন অর রশীদ, হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, সাইদুর রহমান, বুলুু, খোকন সরকার, কবির, ডল, স্বেচ্ছাসেবক দল উত্তরখান থানা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহাগর দক্ষিণ বিএনপি নেতা বাবুল, মানিক, মতিউর রহমান, আলামীন, জামান আহমেদ পিন্টু, ইসমাইল হোসেন তালুকদার, মহিলা দল নেত্রী আরজু, শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর নেতা জিল্লুর রহমান, আলম, জসিম ও আলম দেওয়ানসহ প্রায় ৭০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের বাসভবনে হানা দিয়ে দেশের বর্ষীয়ান এ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদের খোঁজ নেয়। এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানের ধানমন্ডির বাসভবন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর শান্তিনগরের বাসভবন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সার্কিট হাউজ রোডের বাসা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দিলু রোডের বাসা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসানের পল্লবীর বাসভবন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক সিকদার, সাবেরা আলাউদ্দিন, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী আজিজুল হাকিম আরজু ও জিঞ্জিরা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মামুনের বাসাসহ শত শত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশির নামে তা-ব চালিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীকে মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করছে পুলিশ।
গতকাল সন্ধ্যায় আলাদা সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া আদালত থেকে ফেরার পথে বুধবার দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহিলা দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিয়া আলিম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-গণসংযোগ সম্পাদক আমজাদ হোসেন শাহাদাৎ, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুল জাব্বার, যুবদল নেতা মো. রুবেল, মো. হানিফ, মো. দুলাল, মামুন আহম্মেদ, রাকিব আকন্দ, মহিলাদল নেত্রী হোসনা, পারভিন, দিথি, লায়লা, জাকিয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান চেয়ারম্যান, চকবাজার বিএনপি নেতা ফরিদ উদ্দিন জুয়েল, ইবরাহিম, উত্তরা পূর্ব থানার শাহ আলম, মাহবুব খান, সোকন মিয়া, মিন্নাত আলী ও যাত্রাবাড়ীর আমিনুর রহমানসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়াও পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। রিজভী বলেন, বুধবার বিকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি ও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফাওয়াজ হোসেন শুভ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম এবং ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি ও বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজের বাসভবনে তল্লাশি চালিয়েছে ডিবি পুলিশ।
তিন মামলায় আসামি ৯০০: রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় রমনা ও শাহবাগ থানায় দায়ের তিন মামলায় ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। হামলার নির্দেশ দাতা হিসেবে তিন মামলায়ই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক রহিদুল ইসলাম ও এসআই চম্পক বাদী হয়ে শাহবাগ থানা পৃথক দুটি এবং রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিবুল্লাহ রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সরকারি কাজে বাধা দেয়া, পুলিশের ওপর হামলা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘœসহ বেশ কয়েকটি ধারা জুড়ে এসব মামলা করা হয়েছে। রমনা থানার মামলায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে শাহবাগ থানায় দুটি মামলায় রুহুল কবির রিজভীসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এদিকে দুইদিনে রমনা ও শাহবাগ থানা পুলিশ ৫৬ জন গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল তাদের আদালতে হাজির করা হয়। গ্রেপ্তার ৫৬ জনের মধ্যে ৫৫ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
রমনা থানার দায়ের করা মামলায় আসামি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মাহমুদুল হাছান উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গতকাল এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত ওই মামলার এক আসামিকে একদিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ ও ৩৫ আসামিকে দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া অনিন্দ্য ইসলাম ও কেন্দ্রীয় নেতা আনিসুর রহমানের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে, বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে রমনা থানার পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম এই মামলার আসামি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ৩৮ জনকে আদালতে হাজির করেন। মামলার আসামিদের ১০ দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করেন পুলিশের এই তদন্ত কর্মকর্তা। আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। শুনানি শেষে আদালত রমনা থানার মামলার ৩৮ আসামির মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া, আসামি ফরিদ উদ্দীনকে একদিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ ও বাকি ৩৬ জনের প্রত্যেকের দুইদিন করে পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে একই ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের করা দুই মামলায় ১৮ জন আসামির সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন শাহবাগ থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিদার হোসেন। দুই মামলায় ১৮ জন আসামির প্রত্যেককে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।