নিউইয়র্কে হত্যা মামলায় বাংলাদেশী যুবকের ২৫ বছর জেল
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে : নিউইয়র্কে বাংলাদেশী ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন মাহমুদ দুলাল (৫৭)কে গলা কেটে জবাইয়ের মামলায় আরেক বাংলাদেশী যুবক মোহাম্মদ রাসেল সিদ্দিকী (৩০)কে ২৫ বছরের কারাদন্ড দিলো নিউইয়র্কের আদালত। ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ব্রুকলীন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নীল ফিরেটোগ এ রায় প্রদানের সময় রাসেল ছিলেন ভাবলেশহীন। উল্লেখ্য, গ্রেফতারের পর থেকে বিচারের শেষদিন পর্যন্ত রাসেল নিজের দোষ স্বীকার করেন। এহেন নৃশংসতায় দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি জড়িত নন বলেও উল্লেখ করেন।২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রুকলীনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডে ধারালো তরোয়াল দিয়ে দুলালকে জবাই করা হয়। সন্দ্বীপের সন্তান দুলালের ভাড়াটে ছিলেন রাসেল। রাসেলের বাড়ি নোয়াখালী। তিনি দুলালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বেসমেন্টে থাকতেন। সেখানেই দুলালকে হত্যা করে রাসেল বাংলাদেশে পলায়নের চেষ্টা করেন। কিন্তু নিউইয়র্কের পুলিশ সে চেষ্টা ব্যর্থ করে ৮ জানুয়ারি ( হত্যার দুদিন পর) তাকে জেএফকে এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করেছিল। গ্রেফতারের পর জামিন পাননি রাসেল।
রায়ের পর ব্রুকলীনের ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী (ভারপ্রাপ্ত) এরিক গঞ্জালেজ গগণমাধ্যমকে জানান, রাসেল কান্ডজ্ঞানহীন কাজ করেছেন। ৩ সন্তানের জনক দুলালকে হত্যা করে যে অপরাধ করেছেন তার প্রায়শ্চিত্য তাকে করতে হবে। কারাদন্ডের মেয়াদ শেষে রাসেলকে আরো ৫ বছর কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারিতে অতিবাহিত করতে হবে।মামলার রায়ের সময় দুলালের শিশু সন্তানসহ দ্বিতীয় স্ত্রী আফরোজা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও স্বামীকে যে আর ফিরে পাবেন না-এটি উচ্চারণ করেন কাঁদতে থাকেন। এ সময় পরিচিতজনেরা তাকে শান্ত¦না দেন।ব্যাচেলর ভাড়াটে কর্তৃক এমন নির্দয়ভাবে বাড়ির মালিককে হত্যার ঘটনায় কম্যুনিটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। হত্যার মোটিভ নিয়ে সে সময় নানা কথা রটলেও রাসেল বরাবরই একই কথা জানিয়েছেন মাননীয় আদালতকে যে, ‘সময় মতো ভাড়া পরিশোধ করতে পারিনি বলে সব সময় দুলাল আমাকে তুচ্ছ-তাচ্ছ্বিল্য করতেন, এটি সহ্য হয়নি। সেজন্যেই তাকে আমি হত্যা করেছি।’এটি একজন মানুষকে হত্যার একমাত্র কারণ হতে পারে না ভেবে মাননীয় আদালত রাসেলকে বেশ কয়েক মাস মানসিক অবজার্ভেশনে রেখেছিলেন। চিকিৎসাও দেয়া হয়। কিন্তু রাসেলের কথাও কোন হেরফের ঘটেনি।