এম.এ রাজ্জাক, তাহিরপুর :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়া হাওরে নিষেধ অমান্য করে বিল সেচে মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে ইজারার নামে পারমিট গ্রহণকারী হাওর ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রীয় কমিনিটি সদস্য আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে। তার নেতৃত্বে প্রতিদিনই বিভিন্ন বিল ইঞ্জিন চালিত মেশিন দিয়ে সেচে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে মৎস্য আহরণকারীরা। জানা গেছে, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে সেচ মেশিন লাগিয়ে টাঙ্গুয়া হাওরের বাফার জোন বিলের অংশ বিয়াসখালী বিলের পারমিটের মৎস্য আহরণকারীরা শনিবার দুপুর ১২টায় বিল শুকিয়ে মাছ ধরে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত। সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গুয়া হাওরের ছোট-বড় প্রায় ৪২ টি বিল পারমিটে মৎস্য আহরণের উপযোগী রয়েছে। তার মধ্যে ৩১টি বিল পারমিটের আওতায় এনে মৎস্য আহরণের জন্য অনুমোদন দেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক। এসব জলমহাল অর্জিত আয়ের শতকরা ২৪ ভাগ সরকারি কোষাগারে জমা হয় এবং শতকরা ৭৬ ভাগ টাঙ্গুয়ার হাওর কেন্দ্রীয় কোষাগারে জমা হয়। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী ইংরেজি মাসের জানুয়ারির ১ম তারিখ হতে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন শর্তে সাপেক্ষে পারমিটকারীদের ৩ মাসের জন্য মাছ ধরার অনুমোদন দেয়া হয়। জানুয়ারী মাসের ১ম তারিখ হতে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত টাঙ্গুয়া হাওর কেন্দ্রীয় সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির আওতাভুক্ত গ্রামের মৎস্যজীবী সদস্যরা পারমিট ক্রয়ের মাধ্যমে মৎস্য মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ৩ ফুট পর্যন্ত পানি রেখে এবং পানি না শুকিয়ে মাছ ধরার নিয়ম থাকলেও তারা নিয়মনীতি তোয়াক্ষা না করে বিল সেচে শুকিয়ে মাছ ধরছে মৎস্য আহরণকারীরা।

স্থানীয়রা জানান, টাঙ্গুয়া হাওরের বিয়াসখালী বিলের পারমিট গ্রহণকারী হাওর ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রীয় কমিনিটি সদস্য উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে চৌরাজেলেরা সরকারি শর্ত ও মৎস্য সংরক্ষণ আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিলের পানি সেচ দিয়ে শুকিয়ে প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার মাছ আহরণ করে। শনিবার বিকালে সংবাদ পেয়ে টাঙ্গুয়া হাওরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে আব্দুল আলিম সহ তার সঙ্গীয় চৌরা জেলেরা সেচকাজের যাবতীয় সরঞ্জামাদি ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তাহিরপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক হাফিজ উদ্দিন বলেন, সরকারের নিয়মনীতি অমান্য করে এভাবে বিল শুকিয়ে মাছ ধরে যারা বিলের নিচে থাকা কই, মাগুর, শিং, বাইম, পুঁটি, টেংরাসহ দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় মা-মাছ ও মাছের ডিম নষ্ট করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি। অভিযুক্ত আব্দুল হালিম বলেন, বিয়াসখালী বিল সেচে মাছ ধরা হয়েছে সত্য, তবে তার লোকজন বিল সেচে মাছ ধরেনি। তিনি বলেন, মাছ ধরার নিয়মানুযায়ী তার লোকজন বিলে মাছ ধরছে। তাহিরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী বলেন, বিল সেচ দিয়ে মাছ ধরা যাবে না। কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকলে তদন্দ্রক্রমে তার বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn