প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পাপন-দুর্জয় সন্ধি
উপরের ব্যতিক্রমী ছবিটা শনিবারের। সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সঙ্গে খোশমেজাজে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দুর্জয়ের নির্বাচনী এলাকার একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে প্রধান অতিথি হয়ে মানিকগঞ্জের শিবালয় গিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি। পাপন ক্রিকেটের মানুষ। তিনি ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি হবেন কেন, তাও আবার পাপনের নির্বাচনী এলাকার বাইরে, মানিকগঞ্জে গিয়ে! শেখ রাসেল স্মৃতি টুর্নামেন্ট নামের ওই প্রতিযোগিতার আয়োজক মূলত বসুন্ধরা গ্রুপ ও স্থানীয় সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়। দুর্জয় আবার বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালকও। দুর্জয়ের আমন্ত্রণেই ফাইনালের প্রধান অতিথি হয়ে ঢাকা থেকে শিবালয় যান নাজমুল হাসান পাপন। গত দুই বছরের মধ্যে এ দুজন একসঙ্গে তো দূরের কথা, কেউ কারো ছাঁয়া পর্যন্ত দেখতে চাননি। তাহলে কি দুজনের সম্পর্কের বরফ গলেছে? তিক্ততা ভুলে দুই ক্রিকেট সংগঠক কি এক কাতারে চলে এসেছেন? দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে এটা এখন দারুণ গরম খবর। ছবিটাই পরিষ্কার বলে দিচ্ছে, দুজনের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের দিন শেষ।
জানা গেছে, পাপন-দুর্জয়ের কাছাকাছি আসার পেছনে আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা। দুজনের কথা চালাচালি ও তিক্ত সম্পর্ক নাকি একদমই পছন্দ হয়নি প্রধানমন্ত্রীর। দুজনকে ডেকে ক্রিকেট উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সামনের বিসিবি নির্বাচনে পাপনের প্যানেল থেকেই পরিচালক পদে লড়ছেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। কয় মাস আগে বিসিবির প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দেওয়ার যে অভাস দিয়েছিলেন, তা থেকেও সরে এসেছেন পাপন। আরেক দফা বিসিবি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই এগুচ্ছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনও পাচ্ছেন। পাপনের সামনে অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিলেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুর্জয় এখন পাপন প্যানেলের বাইরে থাকবেন না বলে মনে করছেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে দল ঘোষণা দিয়ে কোচের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তখনকার ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান দুর্জয়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরাসিংহের। এ ঘটনায় দুর্জয়-পাপনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। অনেকবারই তীব্র ভাষায় পাপনকে আক্রমণ করেন দুর্জয়। তাকে ছাড়তে হয় গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যানের পদ। দুর্জয়ের জায়গায় ওই পদে আসেন সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান। এরপর থেকে ক্রিকেট বোর্ডেই আসা বাদ দেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়।