ফারাক কমেছে কনজার্ভেটিভ-লেবার দলে
ব্রেক্সিটের পর আরেক পরীক্ষা বৃটেনের ক্ষমতাসীন দল কনজার্ভেটিভ দলের জন্য। তা হলো জাতীয় নির্বাচনে জয় ধরে রাখা। আর মাত্র ১০ দিন পরেই সেখানে জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জনমত জরিপে ক্ষমতাসীন দল কনজার্ভেটিভ পার্টি ও বিরোধী লেবার পার্টির ব্যবধান আগে অনেকটা বেশি থাকলেও, এখন কমেছে। খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে দল দুটি। এ অবস্থায় কিভাবে বৃটেনকে নিরাপদ রাখা যায় এই মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগুচ্ছে তারা। বিশেষ করে ম্যানচেস্টারে ভয়াবহ হামলার পর বৃটেনকে নিরাপদ রাখার ইস্যুটি গুরুত্ব পেয়েছে। ডেইলি টাইমসের পক্ষে একটি জরিপ চালিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউগভ। তাতে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টির জনসমর্থন এখন শতকরা ৪৩ শতাংশ। বিরোধী লেবারদের জনসমর্থন ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ মাত্র ৫ পয়েন্টে এগিয়ে আছে কনজার্ভেটিভরা। লক্ষণীয় বিষয়, নির্বাচন ঘোষণার শুরুর পর্যায়ে এই ব্যবধান ছিল ২০। তখন সবাই ধরে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র কনজার্ভেটিভ পার্টির কাছে পাত্তাই পাবে না বিরোধী নেতা জেরেমি করবিনের লেবার পার্টি। কিন্তু সব হিসাব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বোদ্ধারা মনে করছেন, পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে উঠলে হয়তো ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাড়িটিও ছাড়তে হতে পারে তেরেসা মে’কে। অর্থাৎ তার প্রধানমন্ত্রিত্বও চলে যেতে পারে। এমনটা হলে তা হতে পারে তেরেসা মের জন্য অবমাননাকর। উল্লেখ্য, ইউগভের ওই জনমত জরিপে দেখা গেছে অন্য দলগুলো যেমন লিবারেল ডেমোক্রেটরা জনসমর্থন পেয়েছে ১০ শতাংশ, ইউকিপ পেয়েছে ৪ শতাংশ ও গ্রিন পার্টি পেয়েছে ১ শতাংশ । জরিপে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীনদের দখলে আছে পার্লামেন্টের এমন আটটি আসন হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে তাদের। তা চলে যেতে পারে বিরোধী লেবার পার্টির হাতে। অন্যদিকে লেবারদের যেসব আসন আছে তা হাতিয়ে নিতে পারবে না ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টি। জরিপে দেখা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে লেবার দলের নেতা জেরেমি করবিনের ভাবমূর্তির ব্যাপক পরিবতর্ন ঘটেছে। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের পর থেকে এবং কথিত ডেমেনশিয়া ট্যাক্স নিয়ে বিতর্কের জেরে তেরেসা মের সমর্থন কমেছে। গতে গত সোমবার দিবাগত রাতে ম্যানচেস্টারে অ্যারিনা কনসার্টে সন্ত্রাসী হামলার পর তেরেসার জনসমর্থন বেড়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। অনলাইন স্কাই নিউজ লিখেছে, দু’দল যেহেতু জনমত জরিপে একে অন্যকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে তাই তারা মরণপণ লড়াই করছেন বৃটেনকে নিরাপদ রাখার ইস্যুতে। ম্যানচেস্টার হামলার পর তেরেসা মে একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন। তাতে একটি নতুন কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ কমিশনের নাম হবে কমিশন ফর কাউন্টারিং এক্সট্রিমিজম। এর কাজ হবে উগ্রপন্থা উৎখাতে সরকারকে পরামর্শ দেয়া। এ ছাড়া তারা বহুত্ববাদী বৃটিশ মূল্যবোধের পক্ষে কথা বলবে। নারী অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। তাই তেরেসা মে বলেছেন, বহু জাত, বহু ধর্ম ও বহু সাংস্কৃতিক মিশ্রণের একটি বহুত্ববাদী বিশ্বের সবচেয়ে সফল দেশ হলো বৃটেন। এই ধারণাকে যারা সমর্থন করেন সেইসব মানুষ ও সমাজের সেইসব সংগঠনকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে সরকারের একটি ভূমিকা আছে। অনেক হয়েছে। এখন আমাদেরকে আরো শক্তিশালী হতে হবে। ওদিকে লেবার পার্টিও ম্যানচেস্টার হামলার পর তাদের মেনিফেস্টোতে বিষয়টি জুড়ে দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশে ১০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ কর্মকর্তা, এক হাজার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জেরেমি করবিন।