ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি, সরকারি কর্মকর্তা কারাগারে
বুধবার রাতে উপজেলার বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের সাতগাঁও রাবার বাগানের ফিল্ড অফিসার মনিরুল ইসলাম ও কবির হোসেন নামে অজ্ঞাত নামা এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে একই রাবার বাগানের টেপিং সুপারভাইজার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আরজদ আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। আরজদ সাতগাঁও রাবার বাগান শ্রমিক/কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। অভিযোগে বলা হয়েছে, ৮ এপ্রিল দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র কুমার মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কবির হোসেন তার ফেসবুক আইডি থেকে ‘শেখ হাসিনা নিজের স্বার্থের জন্য যা খুশী তাই করতে পারে। শুধু ক্ষমতা ধরে রাখতে এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখেই…’ লিখে সঙ্গে ৫টি আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করেন। এরপর বিবাদী মনিরুল ইসলাম গত ৯ এপ্রিল রাত ৯টা ৩৩ মিনিটে কবির হোসেনের আইডিতে প্রকাশ করা ওই পোস্টটিতে একমত পোষণ করে তার নিজের ফেসবুক আইডিতে সেটা শেয়ার করেন। এতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর মানহানি ঘটেছে এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘১ ও ২ নং বিবাদীর ফেসবুক আইডিতে এমন পোস্ট লিখে আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করে শুধু দেশের প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করা হয়নি। এর মাধ্যমে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সাথে বিদ্যমান সু-সম্পর্ক বিনষ্ট করার একটি চেষ্টা করা হয়েছে। যা দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডের শামিল।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন (বশিউক) রাবার সিলেট জোনের মহাব্যবস্থাপক ও সাতগাঁও রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক মো.জামিল আকতার বকুল বলেন, ‘ঘটনাটি আমাকে বুধবার সকালে শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি আরজদ অবহিত করেন। আমি বলেছি এ বিষয়ে আমি অজ্ঞ, ধারনা কম। এরপরই আমি মনিরুলকে বলছি, ‘আপনি মহাবিপদে পড়ে যাইতেছেন। এ ধরনের সেনসেটিভ জিনিস নিয়া আপনি খেলেন কেন।’ তখন সে আমাকে বলল যে, আসলে তো স্যার আমি তো এটা বুঝি নাই। পোস্টটি আমার আইডিতে আসার পর ডিলিট করার চেষ্টা করেছি, কখন যে সেন্ড হয়েছে আমি জানি না’।
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারের পর সে আমাকে থানা থেকে ফোন করে বলেছে, ‘পুলিশ তাকে মামলার বিষয়ে জানতে থানায় ডেকে এনেছে’। পরে জানলাম তাকে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। সেজন্য তাকে সরকারি চাকুরীজীবী বিধি মোতাবেক সাসপেন্ড করা হবে। ফিল্ড অফিসার মনিরুল বৃহস্পতিবার কর্মস্থলে ছিলেন কি না জানতে চাইলে জামিল আকতার বকুল বলেন, ‘সে দুপুর পর্যন্ত তার বাগানে কর্মস্থলেই ছিল। ছুটি চেয়েছিল তবে আমি তাকে ছুটি দেইনি।’ শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পরিদর্শক ফজলে রাব্বী বলেন, ‘এজহার নামীয় এক নাম্বার আসামি মনিরুলকে মামলা দায়েরের ১২ ঘণ্টা পরই গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া এজহার নামীয় অপর আসামী কবির হোসেনের অজ্ঞাতনামা ঠিকানার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ এবং তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’