আল-হেলাল, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ জেলা সদরে বিশ্ববিদ্যালয় এর স্থান নির্ধারণের দাবী জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা নিউইয়র্ক আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান শাহী। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী দীর্ঘ ৫০ বছরের পূর্বের। ১৯৭০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন নৌকা প্রতীকের সমর্থনে এমএনএ ও এমপিএ নির্বাচনকে সামনে রেখে হাওরাঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে আসেন তখন থেকেই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ এর পক্ষ থেকে সুনামগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও নদী খননসহ হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন গণদাবী পূরণের কথা উঠে। বঙ্গবন্ধু নিজেই হাওরাঞ্চল এর জনগণকে হাওরকে সাজাতে যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনকের দেখানো স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার কে সামনে রেখেই সুনামগঞ্জে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী কাউকে একথা বলে দেননি যে, সরকারের সবগুলো স্থাপনা একটি নবগঠিত উপজেলার, একটি ইউনিয়নের, একটি গ্রামের আশেপাশে স্থাপন করতে হবে। সরকারের জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, নির্বাচিত এমপি চেয়ারম্যান জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ আলোচনা না করে একক সিদ্বান্ত নিয়ে যে বা যারা চুপিসারে মোটা অংকের সরকারী টাকা ব্যয়ে

২০১৯ সাল থেকে শত শত দলিল রেজিস্ট্রি সম্পাদনের মাধ্যমে জায়গা অধিগ্রহণ করে হঠকারী সিদ্বান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন তাদের জানা উচিত ব্যক্তি বিশেষের একক কোনো সিদ্বান্ত জেলাবাসী কখনই মেনে নিবেনা। বিষয়টি নিয়ে সুদুর আমেরিকা, কানাডা ও যুক্তরাজ্যেসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত সুনামগঞ্জের সকল প্রবাসীরাও আজ মর্মাহত।সকলের দাবী আজ একটাই সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জেলা সদরের পাশে সরকারী খাস খতিয়ানের মৌজায় নামমাত্র মূল্যে অধিগ্রহণ করে জেলা সদরেই স্থাপন করা হউক। শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ অভিমত ব্যক্ত করেন সুনামগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান শাহী। তিনি শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ জিনজিয়ান রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামীলীগের জরুরি সভায় নেয়া সিদ্বান্তকেও স্বাগত জানিয়েছেন। বলেছেন, একনেক-এ পাস হওয়ার সাথে সাথেই সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা সংস্ক্রান্ত ইস্যুতে তাৎক্ষনিকভাবে এই সভা হলে বিষয়টি আরো আগেই ফায়সালা হতো।

উল্লেখ্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সাংসদ মুহিবুর রহমান মানিক, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, অ্যাডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভায় নেতৃবৃন্দ একমত প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হবে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এটি স্থাপিত হবে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বদলে সদর উপজেলার সুবিধাজনক স্থানে, সেক্ষেত্রে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের আহসান মারা সেতুর পূর্বপাশের দেখার হাওর পাড়ে সরকারি খাস ভূমিতে। নেতৃবৃন্দ বলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিতর্ক দেখা দেয়া এবং জায়গা অধিগ্রহণের আগেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সরকারি খাস জমিতে স্থাপন হলে অনেক টাকা বেঁচে যাবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, জরুরি সভায় আহসানমারা সেতু এলাকার দেখার হাওর পাড়ের পূর্বপাশে সরকারি খাস জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে নেতৃবৃন্দ ঐক্যমতে পৌঁছান। সেখানে অনেক জায়গা আছে এবং সরকারি জমিতে স্থাপন হলে সরকারের অনেক টাকা বেঁচে যাবে, জায়গা অধিগ্রহণে আর কোনো বিতর্ক, অনিয়ম থাকবেনা। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বদলে সদরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আগে সংশোধনী আনতে হবে, বিষয়টি উত্থাপন করবেন, সাংসদ মানিক। জরুরি বৈঠকে কমিটির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান টেলিফোনে জরুরি সভায় যুক্ত ছিলেন। অসুস্থতার জন্য সাংসদ জয়া সেন গুপ্তা সভায় উপস্থিত ছিলেন না। পরিকল্পনা মন্ত্রী’র সাথে জেলার সংসদ সদস্যগণ ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলোচনা করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn