‘বাংলাদেশের হবু রাষ্ট্রপতি এসকে সিনহা?’
বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ প্রমাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বাংলাদেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট করতে পারেন। কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে একথা বলা হয়েছে। অমিত বসুর ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ প্রমাণ করার সুযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে। এসকে সিনহাও সেই ইঙ্গিত পেয়েছেন। সেই ইঙ্গিত পেতেই রাষ্ট্রীয় গরিমা প্রকাশে তিনি ব্যস্ত। সিলেটে এক সভায় তিনি (এসকে সিনহা) বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ডলার যার গণতন্ত্র তার। বাংলাদেশে তা নয়। এখানে সবাই সমান।’ নিবন্ধে বলা হয়, ‘২০০৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার প্রধান হন শেখ হাসিনা। দায়িত্ব নিয়েই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তিনি তৎপর। ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বী আইনজীবী সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দেন। এতে আওয়ামী লীগ নেতারাও ক্ষুব্ধ হন। কারণ বিক্ষুব্ধরা জানেন, পদটি কতটা শক্তিশালী। প্রধান বিচারপতির অবস্থান রাষ্ট্রপতির ঠিক এক ধাপ নিচে। পিতা শেখ মুজিবের মতোই প্রধান বিচারপতিকেই রাষ্ট্রপতি করাটা পছন্দ করেন শেখ হাসিনা। এতে সুবিধা দু’দিকে। এক. রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। দুই. একজন আইনজ্ঞকে অভিভাবক হিসেবে পাওয়া। ভারতে প্রথম সংখ্যালঘু রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন মুহাম্মদ হিদায়তুল্লাহ ১৯৬৯-এ। তিনি সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘আইনজীবী বা বিচারপতিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থক কম নেই। তাদের কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে সংখ্যালঘু এসকে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি করলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সংখ্যালঘু মাত্র আট শতাংশ। মৌলবাদ ডানা মেলায় তারা বড় অসহায়। বিশেষ করে দেশত্যাগী হিন্দুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত জেলায় তাদের ভিড়। মৌলবাদীরা সেটাই চায়। বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোই তাদের উদ্দেশ্য। শেখ হাসিনা ধর্মনিরপেক্ষতার পথেই দেশকে টেনে নিয়ে যেতে চান। তার আগ্রহেই ২০১৩’র ২০ মার্চ বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ। আবার সাধারণ নির্বাচন ২০১৯’এ। তার আগেই বর্তমান রাষ্ট্রপতি হামিদের মেয়াদ ফুরানোর কথা। সেই শূন্য আসনে সুরেন্দ্র কুমারকে বসানোর সুযোগ ছাড়বেন কেন হাসিনা। বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ প্রমাণ করার সুযোগ তার সামনে।’
|