‘বিচার বিভাগকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে’ : সুপ্রিম কোর্ট
বিচার বিভাগকে ‘জিম্মি’ করে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। নিম্ন (অধস্তন) আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়ন-সংক্রান্ত আপিল বিভাগের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের শুনানিকালে আজ আদালত এই মন্তব্য করেন। বিচারকদের চাকুরীর শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট জারি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত বলেছেন, ব্যক্তির চেয়ে প্রতিষ্ঠান বড়, প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে হবে। বিধিমালার গেজেট জারি না করে বিচার বিভাগকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আবারও দুই সপ্তাহ সময় আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনের পর আদালত বলেন, দেশে কি কোন সরকার আছে? বিধিমালার গেজেট জারি করতে আর কতদিন সময় প্রয়োজন? রাষ্ট্রের তো একটি ‘ফেয়ার প্লে’র বিষয় রয়েছে। একটা যৌক্তিক কারণ থাকবে তো। এসব কথা বলে ফের দুই সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আট সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। এর আগে শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে গেজেট প্রণয়নের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ সময় চেয়েছেন দফায় দফায়। সবশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নে ১৪ মার্চ পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার মামলাটি কার্যতালিকায় আসলে আদালত নতুন করে সময় মঞ্জুর করে এই মন্তব্য করেন।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধি চূড়ান্ত করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে আপিল বিভাগ এর আগে কয়েক দফায় সেময় দেন। সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় ৮ ডিসেম্বর আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে তলব করে। তবে ১১ ডিসেম্বর রাতে আইন মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রের মাধ্যমে জানায়, নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তবে রাষ্ট্রপতির এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ দ্বিমত পোষণ করেন। আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রপতিকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। বিধি প্রণয়ন সম্পর্কে আপিল বিভাগ বলেন, এটা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন। এখানে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। উল্লেখ্য, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ৭ নম্বর নির্দেশনায় জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের জন্য পৃথক শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে।