বিদ্রোহের মাশুল দিলো আওয়ামী লীগ
ওসমানীনগর ও জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
সিলেটের ওসমানীনগর ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বিদ্রোহের মাশুল দিলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সোমবার অনুষ্ঠিত এই দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী। দুটিতেই হারতে হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে। দুই উপজেলায়ই আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী ছিলেন। দলের ভেতরের এই বিদ্রোহ দমাতে না পারারই খেসারত দিতে হলো আওয়ামী লীগকে। আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়াকেই এই দুই উপজেলায় পরাজয়ের প্রধান কারণ মনে করেন। সোমবার রাতে ফলাফল ঘোষণার পর ফেসবুকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই এ নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিদ্রোহে না পারার জন্য সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দোষারূপ করেছেন তারা।
সোমবারের ফলাফল বিশ্লেষণেও তৃনমূল নেতাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ওসমানীনগর ও জগন্নাথপুর এই দুই উপজেলায়ই বিএনপির বিজয়ী প্রার্থীর চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী মিলে অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন। তবু একক প্রার্থী দিতে পারায় বিজয়ের হাসি হেসেছে বিএনপি। সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ময়নুল হক চৌধুরী (ধানের শীষ) পেয়েছেন ১৯৮৩৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু (ঘোড়া প্রতীক) পেয়েছেন ১৭৮৬৫। আর আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী আতাউর রহমান (নৌকা প্রতীক) পেয়েছেন ৯৮০৯ ভোট।
ফলে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলে পেয়েছেন ২৭৬৭৪ ভোট। যা বিএনপির বিজয়ী প্রার্থীর চেয়ে ৭৮৩৬ ভোট বেশি। অপরদিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান (ধানের শীষ) পেয়েছেন ২৯৯১৪ ভোট। এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আকমল হোসেন (নৌকা) পেয়েছেন ২৫১৯৮ ভোট। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তাদির আহমদ মুক্তা (আনারস) পেয়েছেন ১৩৬১৫ ভোট। এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলে পেয়েছেন ৩৮৮১৩ ভোট। যা বিএনপির বিজয়ী প্রার্থীর চেয়ে ৮৮৯৯ ভোট বেশি। ভোটের এই হিসেব বলছে, দুই উপজেলায়ই একক প্রার্থী দিলে আওয়ামী লীগের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।